
কলকাতা: সরকারি প্যানেল থেকে বাদ পড়েও বিভিন্ন দফতর থেকে মামলায় সরকারের হয়ে সওয়াল করছেন এমন আইনজীবীদের একটা চক্র এবার আদালতের নজরে। এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার বিষয়টি দেখার পর তলব করেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক, লিগ্যাল রিমেমব্রান্স সহ একাধিক অফিসারকে। বিচারপতি বসাকের মন্তব্য, “এটা খোলা দুর্নীতি। তার মানে জুডিসিয়াল অফিসার ফ্রড।” বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “এরকম সবার কাস্টোডিয়াল জেরা হওয়া উচিত। এটা আদালতের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।”
আদালত এই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও রাজ্যের পদক্ষেপের আশ্বাস ও বরিষ্ঠ আইনজীবীদের অনুরোধে বিচারপতি নিজে কোনও পদক্ষেপ করেননি। সরকারি অফিসারদের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “কী করে ১১ সেপ্টেম্বর একজন আইনজীবী মামলা দায়ের করেন, যিনি প্যানেলেই নেই? তাঁকে কি মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল?”
অভিযুক্ত আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, “আপনার এই কাজের জন্য ২ জন বিচার বিভাগীয় অফিসারের চাকরির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। হাইকোর্ট, জিপি সবাইকে আপনি বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছেন। প্রশাসনিক বিভাগ জড়িত হয়ে গিয়েছে।”
বিচারপতি আরও বলেন, “কোন অফিসার আপনাকে বলেছে সই করতে? আপনার জন্য জিপি-কে যুক্তি খুঁজতে হচ্ছে।” অভিযুক্ত আইনজীবীকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, “এবার নাম বলুন কে বলেছিলেন সই করতে? কারণ এটা ফৌজদারি মামলার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে।”
বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “কে বলেছে মামলা দায়ের করতে?” তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “রাজ্য এই ভাবে মামলা পরিচালনা করছে!”
রাজ্যের তরফ থেকে বলা হয়, এইভাবে যাতে মামলা দায়ের করা না হয়, তার জন্য এলআর বিজ্ঞপ্তি তৈরি করেছে সব আইনজীবীদের প্রচার করার জন্য।
বিচারপতি বলেন, “এটা নতুন নয়, এর আগে এমন বেশ কিছু মামলার নিষ্পত্তি করেছি। যেখানে এমন যোগ রয়েছে বলে এখন বোঝা যাচ্ছে।” বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অন্তত ৩১ টি মামলা এখানেই রয়েছে। তার বাইরে সিঙ্গল বেঞ্চে এমন কত মামলা আছে! বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। এই ধরনের সব মামলা প্রত্যাহার করে নতুন করে দায়ের করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।