
কলকাতা: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অনিবার্য কারণ দেখিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করেছে রাতারাতি। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ, অর্থাৎ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য ও আইনের পরীক্ষা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুরোধ সত্ত্বেও পরীক্ষার দিনবদল করেনি CU। তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। CU-র অধীনস্থ কলেজগুলোতে একদিকে যখন হলে পরীক্ষা চলছিল, তখন অন্যদিকে, বাইরে সমর্থকদের টিশার্ট বিলিও চলল। এমনকি টিশার্ট বিলি করতে দেখা গেল সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজের অধ্যক্ষ জাফর আলি খানকে। বিতর্ক দানা বাঁধতেই তিনি অবশ্য বললেন, “পরীক্ষা দোতলা, তিনতলায় হচ্ছে। ছাত্রদের অনুরোধেই দিয়েছি। ওরা বলল এতবার।”
সভা হয় মেয়ো রোডের গান্ধী মূর্তিতে। সেখান থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলো যতটা কাছে, তার থেকে বর্ধমান অনেকটাই দূর। বুধবার রাত পর্যন্তও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা জানতেন, পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু পরীক্ষা দিন সকালেই হঠাৎ একটা নোটিস। তাতে তাঁরা জানতে পারলেন পরীক্ষা আজ হচ্ছে না। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে কোনও অনুরোধ করা হয়নি, তাদের পরীক্ষা নিয়ে কোনও বিতর্কও হয়নি। তবুও পরীক্ষা স্থগিত। তবে কলকাতায় সব মিলিয়ে ৮১টা কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। আবার কলেজের গেট থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছাত্ররা মিছিলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। কলেজের ভিতরেও ধরা পড়েছে দুটো ছবি। যেমন সাউথ সিটি কিংবা সুরেন্দ্রনাথ কলেজে গিয়ে দেখা গেল, একদিকে ক্লাসরুমে পরীক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা ফ্লেগ, ফেস্টুন নিয়ে মিছিলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
যদিও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্তের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে পদক্ষেপ করেছে, সেটাই স্বাভাবিক ও সাধারণ পদক্ষেপ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস, এরকম তো সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই ছাত্র সংগঠনেরই প্রতিষ্ঠা দিবস আছে। তাতে যদি সব এরকম প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে ভয়ঙ্কর কথা।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তো পরীক্ষা নিচ্ছে, বর্ধমান কেন পারল না? সে প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বুঝতে পেরেছে, আজকে অসংখ্য ছাত্রছাত্রী অনুষ্ঠানে যাবে, মিছিলে যাবে। যানজট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, অনাবশ্যক গায়ের জোরে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ট কোড়ানোর জন্য পরীক্ষাদের সমস্যায় ফেলা উচিত নয়।”