Calcutta University’s VC: ‘২ বার HOD, ৬ বারের ডিন, UG বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমি ইন্টারভিউতে ডাকটুকু পাব না? ওদের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছি তাই…’, বিস্ফোরক CU-র ভিসি
Calcutta University: শান্তা বলেন, "আমি বোধহয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবিত একমাত্র ব্যক্তি যাঁর কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ৬টা মেডেল আছে। এই বায়োডেটা নিয়ে পরবর্তীকালে পিএইচডি করেছি। বেস্ট 'গ্রাজ্যুয়েট অফ দ্য ইয়ার' হই।"

কলকাতা: তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠার দিনই কেন পরীক্ষা রেখেছেন? সেই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। এবার তিনিই ডাক পেলেন না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাছাই প্রক্রিয়ায়। একাধিক সরকার বিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে নজির গড়েছিলেন শান্তা। তবে কি শিরদাঁড়া সোজা রাখতেই কি হল কাল? অন্তত ঘুরিয়ে তেমনটাই মানছেন উপাচার্য।
বস্তুত, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য থাকবে না, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসবে স্থায়ী উপাচার্য তা আগেই বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই মতো উপাচার্য বাছাইয়ের কাজ চলছে। তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বক্তব্য, তিনি যেহেতু পরীক্ষার দিন পিছনো নিয়ে রাজ্যের দাবি মানেননি তাই তাঁর যোগ্যতা থাকার পরও ইন্টারভিউ বোর্ড পর্যন্ত ডাকা হয়নি।
তিনি বলেন, “আমি প্রথম দিন থেকে অপছন্দের লোক। প্রথম দিন থেকে পদে পদে অসুবিধা তৈরি করছে। আমি তো এখনও উপাচার্য। অথচ আমিই ডার পাইনি। আর সবাই পেয়েছে। ৩৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ জন ছিল। এই ৩৪ জনের ৩৩ জনই ডাক পেয়েছেন কোনও না কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই আবেদন করেছি। তা হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ আমায় ডাকেনি।”
এরপর তিনি নিজের অভিজ্ঞতার বিষয় তুলে ধরেন। বলেন, “ডাক না পাওয়ার মতো বায়োডেটা নয় আমার। আমি বোধহয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবিত একমাত্র ব্যক্তি যাঁর কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ৬টা মেডেল আছে। এই বায়োডেটা নিয়ে পরবর্তীকালে পিএইচডি করেছি। বেস্ট ‘গ্রাজ্যুয়েট অফ দ্য ইয়ার’ হই। ইউনিভার্সিটি গোল্ড মেডেল পেয়েছি। এটা আমার পড়াশুনো। আর আমার কাজের অভিজ্ঞতা? ২ বছর হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট, ৩ বারের ডিন, ২০ বছর UG বোর্ডের চেয়ারম্যান, ৩ পিজি বোর্ডে। দীর্ঘ আট বছর ICC বোর্ডে প্রিসাইডিং অফিসার। এত লম্বা অভিজ্ঞতা। সুতরাং আমি বাদ যাব? ইন্টারভিউ বোর্ড পর্যন্ত যেতে পারব না? এটা কন্সস্পিরেসি ছাড়া আর কী হতে পারে?”
তিনি বলেন, “আমি তো বলছি না ইন্টারভিউ বোর্ডে সিলেক্ট করতে হবে। ইন্টারভিউতেই ডাকেনি।” তিনি এও বলেন, “আমার মনে হচ্ছে ২৮ তারিখ প্রেসটিজ ইস্যু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে দলীয় রাজনীতির আখড়া করার চেষ্টা করেছে সবাই। সরকারি অফিস বানাতে চেয়েছে। আমি এই বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছি। তাই এত রাগ।”
কী নিয়ে বিতর্ক?
২৮শে অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের পরীক্ষা কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এর পরপরই পরীক্ষার দিন বদল করতে বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় শিক্ষা দফতর। সোমবার ছিল সিন্ডিকেট মিটিং। সেই বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “সিন্ডিকেটে স্পেশাল সেক্রেটারি এসেছিলেন। তিনি এটা উল্লেখও করেছেন যে মুখ্য়মন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। আর তাঁর অনুরোধ মানা উচিতও বলেন তাঁরা। তবে হাউস সর্বসম্মতিক্রমে ২৮শে অগস্টের পরীক্ষার তারিখ ওই জায়গাতেই রেখেছে। তিরিশ হাজার ছাত্র ছাত্রী মানসিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। তাই কিছু ছাত্রের জন্য আমরা ব্যাপক ছাত্রদের এই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি না। তাঁরা পরীক্ষা দেবে। আমরাও ঘোষিত তারিখ একই রেখেছি।” এরপরই ক্ষুব্ধ হন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করেন না। উনি চাইলে ‘কেয়ারটেকার’ ভিসিকে সরাতে পারতেন। রাজ্যপাল উপাচার্যকে যেহেতু বিশেষ স্নেহ করেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী এই স্নেহকে মান্যতা দিয়েছেন। সারাননি। সুপ্রিম কোর্টে হেরেও গিয়েছেন। তবে রাজ্যের পদাধিকারী যিনি কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন না সেটা রাখা যেত বলে আমার মনে হয়।”

