
কলকাতা: চাকরিহারাদের নিয়ে জটিলতার অন্ত নেই। ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিহারা শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারলেও অশিক্ষক কর্মচারি অর্থাৎ গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মীদের স্কুলে যেতে সাফ না করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এবার তাঁদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল রাজ্য সরকারকে। মাসিক সাহায্য দেওয়ার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। গ্রুপ-সি কর্মীদের মাসে ২৫ হাজার ও গ্রুপ-ডি কর্মীদের মাসে দেওয়া হবে ২০ হাজার টাকা। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়েই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। কোর্ট যেখানে নতুন পরীক্ষা নিয়ে ‘ফ্রেশ’ নিয়োগের কথা বলছে, সেখানে কী এভাবে ভাতা দেওয়া যায়? প্রশ্ন ঘুরছে নাগরিক মহলে। আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলছেন, “আদালত অবমাননা হওয়া তো উচিত। আদালত সুয়োমোটো কগনিজেন্স নেবে কী নেবে না সেটা আদালতের বিষয়।” আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তরও একই মত। তিনি বলছেন, “এটা আদালত অবমাননা। জনগণের টাকা, সরকারি টাকা এরকম খোলামকুচির মতো ব্যবহার করা যায় না।” তবে কুণাল ঘোষ বলছেন, “শকুনের রাজনীতি যাঁরা করছেন তাঁদের মায়াজালে পা দেবেন না।”
কুণালদের পাল্টা খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিজেপি। বঙ্গ বিজেপির রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের লোকেরা টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রি করেছে তাই তৃণমূল কংগ্রেসের ফান্ড থেকে ভাতা দেওয়া উচিত। জনগণের টাকায় ভাতা দেওয়ার জন্য সরকার তো অনুমতি নেয়নি। এটা তো আমার আপনার করের টাকায় দেওয়া হচ্ছে। এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও যদি এইভাবে টাকা দেয় তাহলে কোর্টে চ্যালেঞ্জ হবে। যাঁরা মামলা করেছেন তাঁরাই চ্যালেঞ্জ করবেন। শেষে আবার কোর্ট না বলে যাঁরা ভাতা নিয়েছ তাঁরা সুদ সমেত ফেরত দাও!”
কী বলছেন বিকাশ?
বিকাশ ভট্টাচার্য বলছেন, “আদালত অবমাননা হওয়া তো উচিত। আদালত সুয়োমোটো কগনিজেন্স নেবে কী নেবে না সেটা আদালতের বিষয়। তবে শুধু আদালত অবমাননার ব্যাপার নয়। যাঁরা কর দিচ্ছেন, সেই করদাতের ভাবা উচিত তাঁদের করের টাকা জনস্বার্থ বিরোধী কাজে লাগানো যায় কিনা। শুধু আইনজীবী, বিচারপতিরা বুঝবে তা তো নয়। তাঁদের করের টাকায় যদি দুর্নীতিতে কাজে লাগানো হয় তাহলে তাঁদের রাস্তায় নামা উচিত। তা না হলে ধরে নিতে হবে জনগণ চায় যা হচ্ছে হোক। আমাদের কোনও দায় নেই।”
অন্যদিকে আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তও বলছেন, “এটা আদালত অবমাননা। জনগণের টাকা, সরকারি টাকা এরকম খোলামকুচির মতো ব্যবহার করা যায় না। ওনারা কাজ না করে বাড়িতে বসে বসেই এই টাকা পাবেন। এমনকী বলা হয়েছে প্রত্যেক গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের এই টাকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ যাঁরা অযোগ্য প্রামাণিত তাঁদের টাকা দেবেন। কিন্তু, করদাতাদের করের টাকা থেকে এইভাবে টাকা দেওয়া বেআইনি, আদালত অবমাননার সমান। আমরা অবশ্যই এটা নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।” যদিও কুণাল ঘোষ বলছেন, “যা ঘোষণা করেছেন, সবাই শুনেছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে বহু মানুষ বিপদে পড়েছেন। একটি অংশে আমরা দ্বিমত পোষণ করছি। আইনি জটিলতা কাটানোর চেষ্টা করছেন। শকুনের রাজনীতি যারা করছেন, তাদের কোনও মায়াজালে পা দেবেন না।”