
কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআইয়ের কাছে বিস্ফোরক বয়ান নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের। তাঁর বয়ানকে হাতিয়ার করে নারকেলডাঙা থানার তৎকালীন ওসি শুভজিৎ সেন-সহ তিন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। শুভজিৎ সেন ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে নারকেলডাঙা থানার তৎকালীন সাব ইন্সপেক্টর রত্না সরকার ও এক হোমগার্ডের।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন অর্থাৎ ২০২১ সালের ২ মে কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে খুন করা হয়। বিশ্বজিৎ সরকার সিবিআইকে দেওয়া তাঁর বয়ানে অভিযোগ করেন, দুষ্কৃতীরা তাঁর ভাইকে পিটিয়ে খুনের পর ঘটনাস্থলে থাকা রক্ত ধুইয়ে দেন নারকেলডাঙা থানার তৎকালীন ওসি শুভজিৎ সেন। ঘটনাস্থল ঘিরে নমুনা সংরক্ষণ করার বদলে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অভিযুক্তদের দিয়ে প্রমাণ নষ্টের জন্য রক্ত ধুইয়ে দেন বলে অভিযোগ বিশ্বজিতের।
সিবিআই-কে দেওয়া বয়ানে বিশ্বজিৎ আরও জানান, নারকেলডাঙা থানার সাব ইন্সপেক্টর রত্না সরকার তাঁর মাকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেন। তাঁর বয়ানকে হাতিয়ার করেই শুভজিৎ, রত্না এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক হোমগার্ডের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। গত ৩০ জুন শিয়ালদহ আদালতের এসিজেএমের কাছে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সেখানে এই তিনজন ছাড়াও আর ১৫ জনের নাম রয়েছে। তার মধ্যে বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল ও দুই তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার ও পাপিয়া ঘোষেরও নাম রয়েছে।
আরজি কর কাণ্ডে তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। কিন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়নি। এক্ষেত্রে দেখা গেল, মৃত বিজেপি কর্মীর দাদার বয়ানকে হাতিয়ার করে নারকেলডাঙা থানার তৎকালীন ওসি, এক সাব-ইন্সপেক্টর ও এক হোমগার্ডের নাম ও ভূমিকা উল্লেখ করে চার্জশিট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
প্রসঙ্গত, অভিজিৎ সরকারকে খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২১ সালের ২৫ অগস্ট সিবিআই তদন্তভার নেয়। গত সপ্তাহেই এই খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অরুণ দেকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। চার বছর ধরে পলাতক ছিলেন অরুণ দে। সিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক এফআইআর-এ ২০ জনের নাম ছিল। তার মধ্যে ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও ৫ জন পলাতক।