
সময়ের সঙ্গে কলকাতা মেট্রোয় বাড়ছে যাত্রীর চাপ। আর সেই যাত্রীর চাপ সামাল দেওয়ার জন্য দুই ট্রেনের মাঝে সময় কমিয়ে দেওয়াই একমাত্র পথ বলে মনে করছে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে কলকাতা মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ লাইনে ৬ মিনিট অন্তর একটি ট্রেন চলে। কিন্তু সেই সময়ের ব্যবধান কমিয়ে ২ মিনিট করতে চাইছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আর এই পদ্ধতি নিতে গেলে ২ টো জিনিস করতেই হবে, জানিয়েছেন ইঞ্জিনিয়াররা।
কলকাতা মেট্রোর ব্লু লাইন বা উত্তর-দক্ষিণ করডরে দুই ট্রেনের মাঝের ব্যবধান যদি কমাতে হয় তাহলে প্রথমে আরও বেশি রেক প্রয়োজন। আর তারপর ব্লু লাইনের সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নতি করাও জরুরি। এই লাইনে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের মতো কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল বা CBTC সিগন্যালিং সিস্টেম বসানো জরুরি। আশার কথা এটাই যে ইতিমধ্যেই সিগন্যাল ব্যবস্থা বদলানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনাও তৈরি হয়েছে। আর এই সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে ড্রাইভার ছাড়াও মেট্রো চালাতে পারবে কলকাতা মেট্রো। তবে হ্যা, এই সিগন্যাল ব্যবস্থায় একজন ট্রেন অ্যাটেন্ডেন্টের প্রয়োজন হয়।
কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার শুভ্রাংশু মিশ্র জানিয়েছেন, ‘কলকাতা মেট্রোর ব্লু–লাইনে সিবিটিসি অনুমোদন পেয়েছে। তবে এই ব্যবস্থা চালুর আগে ব্লু–লাইনের পরিকাঠামোর ঢালাও উন্নতি প্রয়োজন। আর সেই কাজের জন্যে ৪৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে।’ তবে এই লাইনে সিবিটিসি চালু হতে এখনও অন্তত তিন থেকে চার বছর লেগে যাবে বলেই মনে করছেন মেট্রো আধিকারিকরা। আপাতত দক্ষিণের অন্তিম স্টেশন কবি সুভাষ মেরামতির কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। মনে করা হচ্ছে ২০২৬ সালের শেষের মধ্যে কবি সুভাষ যাত্রী পরিষেবা দেওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়াও ক্রস-ওভার তৈরির কাজও শেষ হবে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে। আর এই সব মিলিয়েই যাত্রী হয়রানি অনেকটা কমবে বলেই ধারণা মেট্রো কর্তৃপক্ষের।
তবে, ব্লু লাইন অর্থাৎ উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের রেকগুলো শুধু ওই সিবিটিসি সিগন্যাল যুক্ত ট্র্যাকে নামিয়ে দিলেই হবে না। এই রেকগুলোয় প্রয়োজনীয় একাধিক পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমানে এই লাইনে যে সব রেক চলে অর্থাৎ আইসিএফ রেক, মেধা রেক বা চিন থেকে নিয়ে আসা সিআরআরসি ডালিয়ান রেকের মধ্যে একমাত্র চিনা রেকগুলোতেই এই সিস্টেম বসানো রয়েছে। ফলে এই লাইনে সিবিটিসি সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু হলে বাকি ট্রেনে বদল না করে ২ মিনিট অন্তর ট্রেন চালানো যাবে না। এই সব কাজ খুব সহজ নয়। তবে ওই, চাইলে কী না হয়। মেট্রোর ইঞ্জিনিয়াররা ইতিমধ্যেই এই সব বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছেন। আর সেই হিসাব করে, অর্থও বরাদ্দ করে দিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।