Mid Day Meal: বাংলার মিড ডে মিলের টাকা যাচ্ছে কোথায়? কেন্দ্রের রিপোর্টে বড় প্রশ্ন বিরোধীদের

Mid Day Meal: কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলের জন্য নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৪৬। সেখানে মিড ডে মিল পেয়েছে ৭৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৪৬ জন। অর্থাৎ নথিভুক্ত পড়ুয়ার ৬৯ শতাংশ মিড ডে মিল পেয়েছে।

Mid Day Meal: বাংলার মিড ডে মিলের টাকা যাচ্ছে কোথায়? কেন্দ্রের রিপোর্টে বড় প্রশ্ন বিরোধীদের
মিড ডে মিল নিয়ে তরজায় বিজেপি ও তৃণমূলImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jun 06, 2025 | 2:41 PM

কলকাতা: মিড ডে মিলে কি আগ্রহ কমছে বাংলার পড়ুয়াদের? কেন্দ্রের এক রিপোর্টে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেন্দ্রের ওই রিপোর্ট বলছে, ৩১ শতাংশ পড়ুয়া গত শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলই খায়নি। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলের অধীনে ছিল ১ কোটি ১৩ লক্ষ পড়ুয়া। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে যা কমে হয়েছে ৮০ লক্ষ। কেন মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের আগ্রহ কমছে, তা নিয়ে আগামী ৩০ জুনের মধ‍্যে রাজ‍্যের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইল কেন্দ্র। আবার কেন্দ্রের এই রিপোর্ট নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিড ডে মিলের চাল চুরির অভিযোগ করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা তথ্য দিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

সরকার পরিচালিত, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দেওয়া হয়। কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলের জন্য নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৪৬। সেখানে মিড ডে মিল পেয়েছে ৭৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৪৬ জন। অর্থাৎ নথিভুক্ত পড়ুয়ার ৬৯ শতাংশ মিড ডে মিল পেয়েছে। আবার কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান এবং উত্তর ২৪ পরগনায় তা অনেকটাই কম। প্রায় অর্ধেক। এদিকে, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলের জন্য নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ৮০ লক্ষের সামান্য বেশি।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ৩১ শতাংশ পড়ুয়ার মিড ডে মিল না পাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “৫০ শতাংশ বাচ্চা মিড ডে মিল খাচ্ছে না। মিড ডে মিল প্রকল্পে কেন্দ্র যে টাকা দেয়, তার ৪ হাজার কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। রাজ্য খরচই করেনি। সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে, কী হচ্ছে, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।”

রাজ্যের শাসকদলকে তোপ দেগে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকেও কাগজর কাটিং-সহ আমার বক্তব্য পাঠিয়েছি। তৃণমূলের লোকেরা মিড ডে মিলের চাল চুরি করছে। ১০০ শতাংশ দেখিয়ে চাল নিচ্ছে। আর ৫০ শতাংশ চাল রান্না হচ্ছে।”

শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “মিড ডে মিল প্রকল্পে দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সেরা কাজ করেছে বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তখন শুভেন্দু অধিকারীর গাত্রদাহ হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে মিড ডে প্রকল্পে এই বাংলার ছেলেমেয়েরা সপ্তাহে একদিন মাংস পাচ্ছে। একদিন মরশুমি ফল পাচ্ছে। বাংলার মিড মে মিলে খাবারের মান এতটাই উন্নত যে কেন্দ্র এসে শংসাপত্র দিচ্ছে।”

বিজেপির অভিযোগ ওড়ালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমার কাছে যে রিপোর্ট আছে সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ছাত্রভর্তি মাথায় রেখে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে গড় কভারেজ নিম্নরূপ: পক্ষে প্রাক প্রাথমিক: ৭৮ শতাংশ, প্রাথমিক: ৭৪ শতাংশ এবং উচ্চ প্রাথমিক : ৫৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট কভারেজ ৬৯ শতাংশ। এছাড়া প্রজেক্ট অ্যাপ্রুভাল বোর্ডের অনুমোদিত বাজেট অনুসারে ৯১ শতাংশ কভারেজ পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে যা ২০২৩-২৪ এ ছিল ৮৫ শতাংশ। তাই পশ্চিমবঙ্গে মিড ডে মিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যে গেল গেল রব উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

এরপরই তিনি বলেন, “২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতবর্ষের বড় রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে মিড ডে মিলের অবস্থা যথেষ্টই ভাল। পশ্চিমবঙ্গে যেখানে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম এনট্রি অনুযায়ী মিড ডে মিলের কভারেজ ৬৯ শতাংশ, সেখানে বিহারে ৪২ শতাংশ, গুজরাটে ৬৪ শতাংশ, রাজস্থানে ৫২ শতাংশ এবং উত্তরপ্রদেশে ৬৪ শতাংশ।”