কলকাতা: আবারও মৃত্যু এক শিশুর। ফের সেই বি সি রায় শিশু হাসপাতাল। এবার মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটা এলাকার ৬ মাসের শিশু জেসমিন খাতুনের। ১১ দিন ধরে জ্বর নিয়ে ভর্তি ছিল বি সি রায় হাসপাতালে। অবশেষে রবিবার সন্ধ্যায় লড়াই শেষ করল একরত্তি। এদিন সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ বি সি রায় হাসপাতালের ICCU-তে থাকাকালীনই মৃত্যু হয় জেসমিনের। অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিল ছোট্ট জেসমিন। প্রথমে তাকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে দিন ছয়েক থাকার পর জ্বর কমলে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়িতে আসার দু-দিন পর ফের জ্বরে কাবু হয় জেসমিন। তখন ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর আবার একটু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসার পর ফের জ্বরে আক্রান্ত হয় জেসমিন। তারপর তার পরিবারের লোক আর ঝুঁকি নিতে চাননি। তাই ছোট্ট জেসমিনকে সোজা বি সি রায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান তাঁরা। জেসমিনের দাদু বলেন, “হাসপাতালের CCU-তে প্রথমে বেড ছিল না। জেনারেল বেডেই ভর্তি করি। ১০ ঘণ্টা পর জেসমিনকে CCU-তে দেওয়া হয়।” সেখানে চিকিৎসায় বেশ সুস্থও হয়ে উঠছিল জেসমিন। কিন্তু, দিন দুয়েক আগে ফের জেসমিনের অবস্থার অবনতি ঘটে। তার দাদু বলেন, “ডাক্তাররা বলেন, অন্য কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু, আমরা ওকে কোন হাসপাতালে নিয়ে যাব! ডাক্তারদের বলি, আপনারাই একটু দেখুন।” তারপর চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হল না। এদিন দুপুর থেকেই জেসমিনের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। অবশেষে সন্ধ্যায় ছোট্ট জেসমিনের মৃত্যুর খবর এল।
একরত্তির মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুদের দাদু। তাঁর কথায়, ডাক্তাররা বলেছেন, “অ্যাডিনো ভাইরাস, নিউমোনিয়া এবং আরও একটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল জেসমিন।” নিউমোনিয়া সহ আরও দুটি ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে জিততে পারল না গাইঘাটার এই একরত্তি।
একইভাবে অ্যাডিনো ভাইরাসের জেরে এদিন দুপুরে মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আরেক শিশুর। রাজশ্রী ঘোষ নামে ২ মাসের শিশুটি দেগঙ্গার বাসিন্দা। সেও ভর্তি ছিল বি.সি রায় শিশু হাসপাতালে। জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল রাজশ্রীর। এদিন দুপুরে তার মৃত্যু হয়। তার আগে এদিন ভোরে প্রাণ হারিয়েছে দুই শিশু- দক্ষিণ ২৪ পরগনার মিনাখা থানার অন্তর্গত চৈতল এলাকার আরমান গাজি এবং মেটিয়াবুরুজ সংলগ্ন নাদিয়াল থানা এলাকার বাসিন্দা আতিফা খাতুন। আরমানের বয়স চারমাস। আর আতিফার বয়স এক বছর সাত মাস। প্রত্যেকেরই একই উপসর্গ ছিল- জ্বর-সর্দি, কারও শ্বাসকষ্ট। শিশুগুলির মৃত্যুর জন্য অ্যাডিনো ভাইরাসই দায়ী বলে তাদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। সবমিলিয়ে, ক্রমশ ভয় ধরাচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস।