কলকাতা: একাধিক সরকারি হাসপাতালে কোভিড কোপ। চিত্তরঞ্জন শিশু সেবা সদনে করোনা বাড়ছে হু হু করে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ জন।
রবিবার সকালেই জানা গিয়েছিল চিত্তরঞ্জন শিশু সেবা সদনে ২৪ জন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই সংখ্যাটাই সন্ধ্যায় বেড়ে ৩৬ হয়ে গেল! এই ৩৬ জনের মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসক রয়েছেন ২৪ জন। মেডিক্যাল অফিসার রয়েছেন ৪ জন। সিনিয়র চিকিৎসক রয়েছেন ২ জন। অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার রয়েছেন ২ জন। এছাড়াও ৩ জন নার্সিং স্টাফ ও ১ জন অফিস স্টাফ এই মুহূর্তে কোভিড পজিটিভ।
একটা হাসপাতালে এতজন স্বাস্থ্যকর্মী একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে নিঃসন্দেহে নতুন করে বেড়েছে উদ্বেগ। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সোমবার সেখানে পরিষেবা সাময়িক স্থগিত রেখে স্যানিটাইজ করা হবে। অর্থাৎ যে রোগীরা সেখানে ভর্তি রয়েছে, তাদের ভর্তি চিকিৎসা হবে তবে স্বাভাবিক পরিষেবায় কিছুটা রাশ টেনে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
করোনার এই নতুন ঢেউয়ে প্রথম থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের সংখ্যা চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনের। শনিবারই দেখা গিয়েছে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কোভিড নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। করোনা আক্রান্ত হয়েছেন নার্সেস ইউনিটির সম্পাদকও।
চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অজয় রায় কোভিড পজিটিভ। একইসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন নার্সেস ইউনিটির সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ও। তিনি এসএসকেএমের অন্তর্গত অ্যানেক্স হাসপাতালে তিনি কর্তব্যরত।
গত বৃহস্পতিবারই ১৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে। শুক্রবার সেই সংখ্যার সঙ্গে যুক্ত হয় আরও ৮। মোট ২১ জনের মধ্যে চিকিৎসক থেকে নার্সিং স্টাফ, রয়েছেন সকলেই। শুক্রবার যে আটজন করোনা আক্রান্ত হন তাঁদের মধ্যে ৬ জন চিকিৎসক রয়েছেন, একজন নার্সিং স্টাফ রয়েছেন। অষ্টম জন লেডিস হস্টেল সুপারের ১৪ বছরের মেয়ে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার যে ১৩ জন আক্রান্ত হন, তাঁরা প্রত্যেকেই চিকিৎসক। শুক্রবার আরও ৬ জন সংক্রমিত হন। অর্থাৎ এখনও অবধি সেখানে ১৯ জন চিকিৎসক সংক্রমিত হয়েছেন। এর ফলে একটা উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে। এমনকী আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গ ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি রাজু বিশ্বাসও কোভিড পজিটিভ হন।
কে একে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিড পজিটিভ হতে শুরু করেছেন। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, যেভাবে পজিটিভিটি রেট বাড়ছে তাতে কিন্তু আইসোলেশনের যে নিয়ম ছিল, অর্থাৎ সাতদিনের আইসোলেশন বা ১৪ দিন ঘরে থাকা তা কতটা মানা সম্ভব হবে তা নিয়েও সন্দিহান স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী যদি কোভিড পজিটিভ হন, তাহলে কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার একটা আশঙ্কা থেকে যায়। তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে স্বাস্থ্য ভবন।
আরও পড়ুন: Covid Bulletine: ভয়ঙ্কর চেহারা! গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সংক্রমণ ৬ হাজার পার, কলকাতাতেই ৩ হাজারের উপরে