
বিধাননগর: কেউ বাস করছেন ৫০ বছর ধরে, কেউ ৭০ বছর ধরে। বাবা-মা, সন্তান-সন্ততি নিয়ে বসবাস করছিলেন তাঁরা। জমির মালিকের নাম শুনলেও চোখে দেখেননি কোনও দিন। হঠাৎ করে শুক্রবার সকালে হাতে আসে নোটিস। আর তারপরই হাজির হয় পুলিশ। আর সেই নোটিস ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল উল্টোডাঙার সিআইটি রোডে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এদিন সকালে বস্তি উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
উচ্ছেদ করতে এদিন সকালে পুলিশ পৌঁছতেই বস্তির বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের দাবি, একটু সময় দিতে হবে। এত বছর ধরে যেখানে সংসার করছেন, সেখান থেকে একবেলায় সবকিছু সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়।
বস্তির এক বাসিন্দা বলেন, “হঠাৎ সকালে একটা চিঠি আসে। তারপরই হাজির হয় পুলিশ। কিছু লোকজন মদ খেয়ে ঢুকে পড়ে ঘরে। আমাদের ছেলেমেয়েদের সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। কী করে উঠে যাব।” এক বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘একটু কথা বল, একটু সময় দে আমাদের। উঠেই যাব।’ এতদিন ধরে যেখানে বসবাস করছেন, সেটা ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতে পারছেন না তাঁরা।
জমির মালিক নিরঞ্জন কুণ্ডু জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১২ থেকে ১৫ বছর ধরে আইনি লড়াই লড়ছিলেন তিনি। এই জমির জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন আগে কেনা জমি খোলাই পড়েছিল। সেখানে অনেকে ঢুকে গিয়েছিলেন। প্রথমে শিয়ালদহ কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। পরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালত বস্তি উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে। তবে আগে থেকে কোনও নোটিস দেননি বলে স্বীকার করে নেন নিরঞ্জন কুণ্ডু।