CM Mamata Banerjee: মমতা: দিল্লি গিয়ে রাস্তা অবরোধ করুন… থানায় থানায় ডায়েরি করুন, বাংলা শান্তির জায়গা, এখানে কেন এসব করছেন?
Howrah: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, অন্য রাজ্যের কেউ কিছু বললে, কেন বাংলায় রাস্তা অবরোধ হবে?
কলকাতা: বাংলার শান্তি যাতে কোনওভাবেই বিঘ্নিত না হয়, হাত জোড় করে এমনই আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলা কোনওরকম অসহিষ্ণুতাকে সমর্থন করে না। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে চলাই বাংলার ঐতিহ্য। সম্প্রতি দিল্লির এক রাজনৈতিক নেত্রীর বক্তব্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার হাওড়ার বেশ কয়েকটি জায়গায় পথ অবরোধের ঘটনা ঘটে। রাস্তায় নেমে তুমুল ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। এদিন সেই বিষয়কে সামনে রেখেই সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্বেষ ছড়ায় এমন কোনও বক্তব্যকে তিনি সমর্থন করেন না। এ বিষয়ে টুইটে তিনি স্পষ্ট করেছেন নিজের অবস্থানও। তবে একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “প্রতিবাদের ভাষা এমন কিছু হওয়া উচিৎ নয়, যাতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। আমরা বাংলায় সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব জাতি, সব ভাষার মানুষ একসঙ্গে থাকি। সম্প্রীতি সংহতি এখানে শেষ কথা।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, অন্য রাজ্যের কেউ কিছু বললে, কেন বাংলায় রাস্তা অবরোধ হবে? মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সকাল থেকে হাওড়ার চার পাঁচটা জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে, মানুষগুলোকে ভুগতে হচ্ছে। যাদের আপত্তি আছে, দিল্লি চলে যান। দিল্লি গিয়ে রাস্তা অবরোধ করুন। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তো আপনাদের রাগ। বাংলা শান্তির জায়গা, এখানে কেন সেটা করবেন? মানুষ বিরক্ত হচ্ছে, আমাদের গালাগালি শুনতে হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, তিনি সকাল থেকে নবান্নে বসে দেখেছেন রাস্তাঘাটের অবস্থা কতটা শোচনীয়। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, হাজার হাজার গাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তারের গাড়ি, পুলিশের গাড়ি, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি সমস্ত কিছু রাস্তায় দাঁড়িয়ে। একটা ন্যাশনাল হাইওয়ে আটকে বাংলার মানুষকে সমস্যায় ফেলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তাঁর সংযোজন, “আমরা চাই না কোনও ঘটনা ঘটুক। নাখোদা মসজিদের ইমামের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। উনি নিজে বলেছেন, ওনারা এসব পছন্দ করেন না। উনি বলেছেন, রাস্তা অবরোধ না করার জন্য। ফুরফুরা শরিফ থেকেও বলেছে। আমরা বাংলায় রাস্তা অবরোধ করতে দিই না, বনধ করতে দিই না। কেন দিল্লিতে কিছু ঘটলে বাংলায় ঝামেলা করতে হবে? সকলেই আমাদের ভাই বোন। দিল্লির দু’টো বদমাশ কী বলল তার জন্য বাংলায় অবরোধ করার দরকার নেই। যান বিজেপি রাজ্য গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে গিয়ে করুন। বাংলায় তো ওরা নেই…মানুষ গাড়ির ভিতর কষ্ট পাচ্ছে, বসে আছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাদের কী অপরাধ? আমার আবেদন পাবলিককে রেহাই দিন। বাংলায় এসব করতে হবে না।”
বার বার এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে হাত জোড় করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শান্তির বার্তা দিতে শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, “দু’ একজন এসব করছে। রাস্তা অবরোধ করবে না। যদি মনে হয় কিছু করা উচিৎ, তাহলে থানায়, থানায় ডায়েরি করুন। এফআইআর করুন ওই দু’জনের বিরুদ্ধে। মানুষকে সমস্যায় ফেলবেন না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় মানুষ। এইটুকু মানবিকতা কি আমরা দেখাতে পারি না? দয়া করে অবরোধের রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন। কেন বাংলায় গন্ডগোল হবে? এটা একটা শান্তির জায়গা। আপনাদের সকলের ভোট আমাদের জিতিয়েছে। সকলে আমরা সকলের জন্য।”