প্রচারে ‘হিংসার উস্কানি’, মিঠুন-দিলীপের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
অভিযোগ, প্রচারে বেরিয়ে দলীয় (BJP) কর্মী-সমর্থকদের যদি কেউ এ ধরনের বার্তা দেন, তা হলে তাঁরা তো হিংসার পথই বাছবে।
কলকাতা: নির্বাচনী জনসভায় ‘ঝাঁঝাল’ বক্তব্য। তারই জেরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও দলের নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর নামে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের হল। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এক সময় সিপিএমের সঙ্গে থাকা মিঠুন চক্রবর্তী লাল দুর্গের মুষলপর্বে ভিড়ে যান তৃণমূল শিবিরে। সেখানেও চুটিয়ে কয়েক বছর ছিলেন। এরপর একুশের ভোটের আগে হঠাৎই যোগ দিলেন বিজেপিতে। মানুষের জন্য কাজ করবেন বলেই এই যোগদান, জানিয়েছিলেন বাঙালির ‘মহাগুরু’। তবে পদ্মপতাকা হাতে তুলে তাঁর প্রথম বক্তব্যই ছিল, ‘আমি জলঢোড়াও নই, বেলেবোড়াও নই, জাত গোখরো। এক ছোবলেই ছবি।’ ছবির সংলাপ বটে! তবে ভোট প্রচারের মঞ্চে এ সব ডায়লগ ‘হুমকি’ হিসাবেই নিয়েছে বিজেপির বিরোধী শিবির। দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও প্ররোচনামূলক বক্তব্যের অভিযোগ উঠেছে একাধিক সভায়। বরানগর থেকে তিনিই বলেছিলেন, ‘জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি’ হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: সতর্ক বার্তা এল তৃতীয় ঢেউয়ের! আপনার অসাবধানতা বিপদ বাড়াবে আপনার শিশুর
এবার এই দু’জনের বিরুদ্ধে সটান অভিযোগ নিয়ে থানায় হাজির হলেন মৃত্যুঞ্জয় পাল নামে এক তৃণমূল কর্মী। রীতিমত লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ভোট ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। গৃহহীন হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হয়েছে তৃণমূলের একাধিক সমর্থককে। আর এই হিংসার অন্যতম কারণ হিসাবে মৃত্যুঞ্জয় মিঠুন চক্রবর্তীর বক্তব্যকে কাঠগড়ায় তুলেছেন।
আরও পড়ুন: লোকাল, প্যাসেঞ্জারের পর এবার বাতিল শতাব্দী-রাজধানী-দুরন্তও
তাঁর অভিযোগ, “একাধিক জনসভায় মিঠুনকে বলতে শোনা গিয়েছে মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে কিংবা এক ছোবলে ছবি। একজন নেতার এসব উস্কানিই বিজেপি কর্মীদের হিংসায় প্ররোচনা দিয়েছে। খুন পর্যন্ত করা হয়েছে তৃণমূলের লোককে।” অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ের অভিযোগ, “প্রকাশ্য নির্বাচনী সভায় দিলীপ ঘোষ কখনও বলেছেন ছেলে বউকে দেখার লোক থাকবে না। কখনও বলেছেন, অনাথ করে দেব। আবার কখনও তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে কেউ ভোগ করতে পারবে না কিংবা ছয় ফুট নিচে পাঠাব না হলে উপর থেকে ছয় ফুট নামাব।”
তৃণমূলের এই নেতার অভিযোগ, প্রচারে বেরিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের যদি কেউ এ ধরনের বার্তা দেন, তা হলে তাঁরা তো হিংসার পথই বাছবে। বিজেপির লোকজনও তাই ভোটের আগে-পরে হিংসা করে চলেছে। এ প্রসঙ্গে মানিকতলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”