
কলকাতা: দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিনই সনাতনী ধর্ম সম্মেলনের আয়োজন করতে চেয়ে মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছে ওই সংগঠন। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে ছিল সেই মামলার শুনানি। আর সেখানেই একের পর এক প্রশ্ন তুলল রাজ্য। কারা দিচ্ছে টাকা? কেন ওই দিনটাকেই বেছে নেওয়া হল?
এদিন মামলাকারীর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, স্থানীয় ক্লাবের তরফে ওই সম্মেলনের জন্য বায়ো টয়লেট দেওয়া হচ্ছে। এক লক্ষ জলের প্যাকেটের ব্যবস্থা করাও হচ্ছে। তিনি আরও জানান, একসঙ্গে ৫০ হাজার লোক আসবে না।
তবে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের প্রশ্ন, “৪-৫ জন লোক এতবড় কর্মসূচি করতে পারে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? ৫০টি বায়ো টয়লেট বসানোর টাকা কে দেবে? মেডিক্যাল ক্যাম্পের টাকা কে দেবে? কোনও হিসেব কি দেওয়া আছে?” ওই দিনটাকেই কেন বেছে নেওয়া হল! এই প্রশ্ন তুলে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, “এই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি তো এমন নয় যে ৩৫০ বছর পরে এসেছে, আবার ৪৩৫ বছর পরে আসবে!” কেউ আড়াল থেকে এই সম্মেলন করতে চাইছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিনের শুনানিতে রাজ্যের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “৫০ হাজার লোক আনতে হলে, এক হাজার বাস লাগবে। যদি টোটো করে আসেন, তাহলে তো ১০-১৫ হাজার টোটো লাগবে। কীভাবে ৫০ হাজার লোক যাবেন? বিশেষ ট্রেনও বাতিল হয়েছে। আমরা গাধা নই, যে এটা বিশ্বাস করে নেব যে লোক কলকাতা থেকে হেঁটে কাঁথি যাবেন।” তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ওই দিন জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পাশাপাশি নাচিন্দা মন্দিরেও শীতলা পুজো আছে। সেখানেও এক লক্ষ লোক হওয়ার কথা। ফলে, পুলিশ মোতায়েন করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেন পুলিশ অনুমতি দেয়নি তার কারণ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও সওয়াল করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কারা এই মামলাকারীরা? এরা কেউ রামকৃষ্ণ বা স্বামী বিবেকানন্দ বা শঙ্করাচার্য নন যে ডাকলেই লোক আসবে। টাকা কে জোগাচ্ছেন? খরচ কত?” তাঁর আরও দাবি, জলের পাউচ দিয়ে কোনও কাজ হয় না, ফুটবলের মত ছুড়ে ফেলা হয়। এর জন্য জলের ট্যাঙ্ক লাগে। সব জলের ট্যাঙ্ক তো সেদিন জগন্নাথ মন্দিরে এবং নাচিন্দা মন্দিরে থাকবে।
আইনজীবী বলেন, “সাত দিন পরে করলে কী অসুবিধা? রবীন্দ্রজয়ন্তীতে করলে কী অসুবিধা? অন্যদিন করলে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। বদলা নেওয়ার মানসিকতা ছেড়ে অন্যদিন অনুষ্ঠান করুন।”
সোমবার শেষ হল সনাতনী সম্মেলন সংক্রান্ত মামলার শুনানি। রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে।