কলকাতা : ভবানীপুরের উপ নির্বাচনের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানিয়েছিলেন বকেয়া পুরভোটগুলি করার উদ্যেগ নেওয়া হবে। সেই মতো কিছুদিন আগেই প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য। কলকাতা (Kolkata) ও হাওড়া (Howrah) পুরনিগমের ভোট করতে চেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission) চিঠি দিয়েছিল রাজ্য সরকার (State Govt)। সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে কমিশন। রাজ্যের প্রস্তাবিত দিন অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বরেই হবে কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোট হবে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রস্তাবে কোনও আপত্তি জানায়নি কমিশন। আজই তারা চিঠি দেবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে।
মেয়াদ শেষ হলেও এখনও পর্যন্ত পুরভোট হয়নি রাজ্যে। রাজ্যের মোট ১১৬ টি পুর নিগম ও পুরসভার ভোট বাকি আছে। কিন্তু, প্রথমে মাত্র দুটি পুরনিগমের ভোট করতে চেয়েছে রাজ্য। রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত ভাল চোখে দেখেনি বিরোধীরা। বিজেপি বা সিপিএমের নেতারা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু শেষমেস, রাজ্যের সিদ্ধান্তই মেনে নিল কমিশন।
এ দিন খবর প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি। আমরা চাই সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট হোক। নাহলে এত দিন ধরে ভোট ফেলে রাখার মানে কি? এত দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুরসভাগুলোতে ভোট হয়নি। এর কারণ কী? রাজ্যবাসীর জানার অধিকার আছে।’
আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল বিজেপি। সেই মতো আজ কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে। এ দিন সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আমরা আদালতে গিয়ে কথা বলব। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আমাদের কোনও আশা নেই।’
এই ভাবে দুই পুরসভায় ভোট করার পিছনে নিশ্চয় পরিকল্পনা আছে বলেও মন্তব্য করেন বিজেপি সাংসদ। তাঁর দাবি, টকলকাতা ও হাওড়া, এই দুই জায়গায় বিজেপি অপেক্ষাকৃত খারাপ ফল করেছে। তাই তৃণমূল চাইছে, শুরুতেই ওই দুই জায়গায় বিজেপিকে কোণঠাসা করে গুণ্ডা-মস্তানদের দিয়ে ভোট করাতে।ট সব জায়গায় একসঙ্গে ভোট হলে গুণ্ডা মস্তানদের পাঠানো সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সুকান্ত মজুমদার আরও জানান, ভোটের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। আজই তাঁদের এই সংক্রান্ত বৈঠক রয়েছে। খুব শীঘ্রই কমিটি ঘোষণা হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা প্রথম থেকেই এই দাবি করে এসেছি। যে ভোটগুলো কাছাকাছি সময়ে হয়, তা এক সঙ্গে হোক সেটাই সকলে চান। বাম আমলেও তাই হয়েছে। একটা ফেব্রুয়ারিতে হবে, আরেকটা মার্চে হবে! এর তো কোনও যুক্তি নেই। একসঙ্গেই ছিল। কেন আলাদা করা হচ্ছে কে জানে। এখন তো সমস্ত পুরসভা বেআইনি। আইনি পুরসভা বলে পশ্চিমবঙ্গে কিছু নেই। এক বছর, দু’বছর, তিন বছরের সব বেআইনি পুরসভা। সবকটায় ভোট হওয়া দরকার। তা হলে দফায় দফায় ভোট করানোর কী যুক্তি।”
আরও পড়ুন: Partha Chatterjee: পরিষদীয় কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে নাম না করে রাজ্যপালকে নিশানা পার্থ’র