
বারাসত ও নিউটাউন: নিউটাউনে কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষীসাব্যস্ত টোটোচালক সৌমিত্র রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিল বারাসত পকসো আদালত। পাশাপাশি তাঁকে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মাত্র সাতমাসের মধ্যে সমস্ত নথি ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বুধবার সাজা ঘোষণা হয়। সৌমিত্র রায়ের আইনজীবী জানান, তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন। অন্যদিকে, মৃত কিশোরীর পরিবার বলছে, তারা ওই টোটোচালকের ফাঁসি চেয়েছিল।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি নৃশংস ওই ঘটনাটি ঘটেছিল। আগের রাতে পরিবারের সঙ্গে ঝগড়া করে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী নিউটাউনের গৌরাঙ্গনগরে তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে নিউটাউনের লোহাপুলের কাছে জঙ্গল থেকে তার অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল নিউটাউন থানার পুলিশ।
তদন্তে উঠে আসে, রাগ কমে যাওয়ার পর বাড়ি ফেরার জন্য কিশোরী সৌমিত্র রায়ের টোটোয় উঠেছিল। বাড়ির ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিল টোটোচালক সৌমিত্র রায়কে। সৌমিত্র তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিল। তবে, তাকে একা পেয়ে বাড়ি না পৌঁছে দিয়ে নিউটাউনের একাধিক এলাকা ঘুরে নিয়ে যায় লোহাপুলে। সেখানে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যা করে। ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে কিশোরীর অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি রাতেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত সৌমিত্রকে। মামলায় আদালতের কাছে মেডিক্যাল রিপোর্ট, ডিজিটাল, টেকনিক্যাল, বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স-সহ একগুচ্ছ প্রমাণ পেশ করা হয়। তাতে ধর্ষণ ও খুনে সৌমিত্র রায় যোগের প্রমাণ মেলে। সাতমাস ধরে মামলা চলার পর সোমবার তাকে দোষীসাব্যস্ত করেন বিচারক। আর এদিন সাজা ঘোষণা করেন।
বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, তাঁরা ফাঁসির আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু, বিচারক আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই রায়ে তাঁরা খুশি। অভিযুক্তের আইনজীবী বিজনকুমার মিত্র জানান, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
মৃত কিশোরীর খুড়তুতো দাদা বলেন, “খুব যন্ত্রণা দিয়ে মেরেছে। আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। ফাঁসি হলে সন্তুষ্ট হতাম। কিন্তু, আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।” তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা আদালতে যাচ্ছেন না বলে জানালেন।