কলকাতা: ভয় ধরাচ্ছে করোনা গ্রাফ। কলকাতায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই এ বার ফের বাড়ানো হল মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা। আগে মোট ২৫ টি এলাকাকে চিহ্নিত করে মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োন (Micro Containment Zone) ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বার সেই সংখ্যা বেড়ে হল ৪৮। অর্থাৎ, প্রায় দ্বিগুণ। মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োনের তালিকায় রয়েছে রীচি রোডের একটি আবাসনও। সেখানে আবাসনের সামনে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আরও বেশি মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োন (Micro Containment Zone) বাড়ানো হতে পারে। সাধারণত, ছোট ছোট আবাসনগুলিতে যেহেতু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে তাই, ধীরে ধীরে আবাসনগুলিকে মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োন করে দেওয়া হবে। উত্তর কলকাতাতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। তাই সংক্রমণ রোধে বিশেষ পদক্ষেপ করছে পুরসভা।
নতুন করে হওয়া এই মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োনের তালিকায় রয়েছে উত্তর কলকাতার একাধিক এলাকা। শ্যামপুকুর ফুলবাগান, মানিকতলা, বৌবাজার, প্রগতি ময়দান-সহ একাধিক এলাকা। এছাড়াও রয়েছে, গড়িয়াহাট, রিজেন্ট পার্ক, শেক্সপিয়র সরণি, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকা।
লক্ষ্যণীয়ভাবে অনেকটা এলাকা জুড়ে নয়, কোনও কোনও আবাসনের কেবল একটি তলকেও মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে ওই নির্দিষ্ট আবাসনের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে যে মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োনগুলি তৈরি হয়েছে সেই তালিকায় রয়েছে ডায়মণ্ড সিটির ২ টি টাওয়ার। এছাড়াও রয়েছে, গড়িয়াহাটের তিনটি আবাসনের দ্বিতল ও ত্রিতল চত্বর। সেক্ষেত্রে গোটা আবাসনটি কনটেইনমেন্টের তালিকায় রয়েছে। কনটেনমেইনটের তালিকায় রয়েছে তিনটি ছাত্রাবাসও।
গত সোমবার পুরনিগমের বৈঠকের পর ২৫ টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োনের কথা ঘোষণা করা হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজ্যে কনটেইনমেন্ট জ়োনের সংজ্ঞা বদলেছে। আগে যেখানে একটি বড় এলাকা বা একটি গোটা পাড়াকে কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করে এলাকার প্রবেশপথ বাঁশ, পুলিশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হত, এখন পরিস্থিতি তেমন নয়। বর্তমানে ছোট ছোট এলাকা চিহ্নিত করে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এক একটি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে একটি বহুতল ফ্ল্যাট বা একটি একক বাড়িও হতে পারে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
যে এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ফ্ল্যাট এবং কমপ্লেক্স এলাকার সংখ্যাই বেশি। বস্তি এলাকায় কনটেইনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। সংক্রমণের হারও বস্তি এলাকাগুলিতে অনেকটাই বেশি। এর পাশাপাশি কলকাতার সীমিত কিছু এলাকায় বিশেষ নজরদারিও চালাবে পুর প্রশাসন। পূর্বে ঘোষিত কলকাতা পুরনিগমের কনটেনমেন্ট ২৫ টি জ়োনের মধ্যে বস্তি এলাকা রয়েছে চারটি আর বহুতল রয়েছে নয়টি। এছাড়াও পাঁচটি, পাঁচটি মিক্সড এরিয়া এবং চারটি হস্টেল রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য হরেকৃষ্ণ শেঠ লেন, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম সহ মোট তিনটি সেফ হোম চালু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন বহুতলগুলির লিফ্ট স্যানিটাইজ় করতে হবে বলেও পুরনিগমের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রত্যেকটি বাজার এলাকাকে স্যানিটাইজেশন করার পথে পুরসভা। বাজারে প্রত্যেক বিক্রেতার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। এই বিষয়ে পুলিশকে কড়া ভূমিকা পালন করতে বলেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যাঁরা মাস্ক পরবেন না, তাঁরা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন না বলেও কড়া বার্তা দিয়েছেন মেয়র।