কলকাতা: দেউচা পাচামি দেওয়ানগঞ্জ হরিণসিঙা কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে এত বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতে কাঁটা থেকেই যাচ্ছে। কোনওভাবেই এই প্রকল্পে সায় দিচ্ছেন না স্থানীয়দের একটা বড় অংশ। এর আগেও ক্যাবিনেট বৈঠকে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কনস্টেবল পদে চাকরির কথাও বলা হয় জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য। কিন্তু তাতেও প্রতিবাদের ধার কমানো যায়নি। সোমবার ফের ক্যাবিনেট বৈঠক হয়। নতুন করে বাড়ানো হয়েছে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ। চাকরি পাবেন ৫ হাজার ১০০ জন। মহিলাদের জন্য থাকবে উন্নয়নমূলক সামাজিক প্রকল্প। বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা নিজেই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে এদিন বিস্ফোরক দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, একদল খাদান মালিকের উস্কানিতেই এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার জোর করে, জবরদস্তি দখল করে কোনও কাজ করি না। গরীবের পেটের ভাত মেরে আমি কোনও কাজ করি না। কাউকে আমি বঞ্চনা করি না। দেউচা পাচামি বাংলার একটা প্রকল্প। এটা বাংলার মুখ হবে। লক্ষাধিক ছেলে মেয়ে চাকরি পাবে। পাঁচটা রাজ্যের হাতে ছিল এই প্রকল্প। অনেক কষ্ট করে আমরা দু’বছর লড়াই করে এটাকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছি।”
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্য বহু টাকা খরচ করবে। কিন্তু কিছু খাদান মালিক এখানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আমি জানি কিছু খাদান মালিক টাকা দিয়ে লোক নিয়ে যাচ্ছে এবং ভুল বোঝাচ্ছে। কারণ তাঁরা চায় না বেআইনি খাদানগুলো সরকারি খাদানের মধ্যে আনা হোক। এতে তাঁদের ব্যক্তিগত আগ্রহ আছে।”
সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৫ হাজার ছেলে মেয়ে হোমগার্ড, কনস্টেবলের চাকরি পাবে। এর আগের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল শুধুই কনস্টেবলের চাকরি পাবেন জমিদাতারা। কিন্তু এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী দেওয়া হবে গ্রুপ সি পদেও নিয়োগ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজকেও পাঁচ হাজার ছেলে মেয়েকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার জন্য, কনস্টেবলের চাকরি দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাঁরা বাড়ি জমি দেবেন, যাঁদের কোয়ালিফিকেশন আছে, তাঁরা সেই মতো গ্রুপ সি নিয়োগ পাবেন। আমাদের এক হাজার একর জমি আছে। সেখানেও আমরা কিন্তু মানুষকে অবদমিত করছি না। অনেক মানুষ আছেন ওখানে যাঁদের জমিই নেই।”
মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বলেন, “যারা জমি দিচ্ছেন জমির দামের থেকে দ্বিগুন ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি। শুধু জমিদাতারাই নন, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ওখানে বসবাস করেন, অথচ জমির কোনও রেকর্ড নেই তাঁদেরও ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও জমির বদলে জমি দেওয়া হচ্ছে, সঙ্গে বাড়ি করার জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিংবা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। আগে ৬০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা ছিল একটা বাড়ি করার জন্য। সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা। আজ যে ক্যাবিনেট পাশ হল তাতে ৭০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা সঙ্গে ৭ লক্ষ টাকাও দেওয়া হবে বাড়ি করার জন্য। শিফটিং অ্যালাওয়েন্স এককালীন ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: AMTA Student Death: ‘মুখ্যমন্ত্রী এলে ভালো হয়’, নবান্নে যাচ্ছেন না আনিসের বাবা-দাদা