DEV EXCLUSIVE: ‘সিএম আমাকে ফোন করেছিলেন, বললেন কুণাল যা বলছে…’, কুণাল-ব্রাত্যর মন্তব্য নিয়ে এবার সরাসরি মুখ খুললেন দেব

DEV EXCLUSIVE: TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন অভিনেতা দেব। জানালেন, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করেছেন, কুণাল ঘোষের কথায় তিনি দুঃখপ্রকাশও করেছেন। এরপর কি আর কুণাল-ব্রাত্যর কথায় তিনি কিছু 'রিঅ্যাক্ট' করবেন, প্রশ্ন দেবের!

DEV EXCLUSIVE: সিএম আমাকে ফোন করেছিলেন, বললেন কুণাল যা বলছে..., কুণাল-ব্রাত্যর মন্তব্য নিয়ে এবার সরাসরি মুখ খুললেন দেব
এক্সক্লুসিভ দেব!Image Credit source: TV9 Bangla

Oct 05, 2025 | 8:02 PM

কলকাতা: উৎসবের মরশুমে জমে উঠেছিল দেব-কুণাল বিতর্ক। নেপথ্যে রঘুনাথ বনাম রক্তবীজ ২! সামাজিক মাধ্যমেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের একের পর এক বিস্ফোরক পোস্ট, তাতে দেব ঘনিষ্ঠ প্রযোজকের উত্তর! তড়তড়িয়ে বেড়েছে বিতর্ক।  তাতে সম্প্রতি ঘৃতাহুতি করেছেন ব্রাত্য বসু! এবার তা নিয়ে TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন অভিনেতা দেব। জানালেন, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করেছেন, কুণাল ঘোষের কথায় তিনি দুঃখপ্রকাশও করেছেন। এরপর কি আর কুণাল-ব্রাত্যর কথায় তিনি কিছু ‘রিঅ্যাক্ট’ করবেন, প্রশ্ন দেবের! পাল্টা এটাও বুঝিয়ে দিলেন, কোনও বিতর্কে তাঁর আগেও কিছু যায় আসেনি কাজে, তাঁর লক্ষ্য অনেক বড়, আর সে লক্ষ্যে কোনও কাঁটা বিঁধাতে পারবে না কুণাল-ব্রাত্যর মন্তব্য!

বিতর্কের সূত্রপাত

বিতর্কের সূত্রপাত রঘুডাকাত নিয়ে। ট টলিপাড়ার একাংশের অভিযোগ, প্রেক্ষাগৃহ এবং প্রদর্শন-সময় দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ‘রঘু ডাকাত’ ! আর সেই বিতর্কেই ঘৃতাহুতি করেন কুণাল ঘোষ। এক বার্তায় লিখেন, “যা খবর, ‘প্রভাবশালী’ একটি ছবি শুরু থেকেই একাধিক প্রেক্ষাগৃহে বাড়তি প্রদর্শন-সময় পাচ্ছে। ‘রক্তবীজ ২’-এর মতো প্রথম পর্ব সুপারহিট হওয়া ছবিকেও কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গোড়া থেকে। এটা কাম্য নয়। শুরুতে সবাই সমান সুযোগ পাক। তার পর দর্শকের বিচার। সেটা না হলে এত বৈঠকের মানে কী?”

কুণাল ঘোষের মন্তব্য

কুণাল ঘোষের এই বার্তা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। তারই মধ্যে আবার রঘুডাকাত নিয়ে কুণাল ঘোষের রিভিউ, আর তাতে দেব ঘনিষ্ঠ প্রযোজকের পাল্টা মন্তব্য। রক্তবীজ ২ নিয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে কুণালকে। এদিকে, দেবের হয়ে লড়ে গিয়েছেন প্রযোজক রানা সরকার। জল গড়ায় অনেকদূর। কুণালকে সরাসরি এই নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। দেবের বিরুদ্ধে মূলত তাঁর অভিযোগ,  প্রভাব খাটিয়ে বেশি প্রেক্ষাগৃহে বেশি শো পাওয়া। কুণাল সরাসরি তখন বলেছিলেন, “ছবি রিলিজের আগে উদারতা দেখালেই তো ভাল হয়। ছবি রিলিজের পর আমি কত উদর, সেটা দেখানো, সময় সময় বেছে বেছে উদার হওয়া সমস্যা। যারা চেষ্টা করছে, তাদের সকলকে সমানভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছাতে দেওয়াই কাম্য। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির ভিতরেই যদি রাজনীতি হয়, সেটা অনুচিত।”

‘দেবের শত্রু হতে যোগ্যতা লাগে’

যদিও সে সময়েও বিশেষ একটা এই মন্তব্যে গুরুত্ব দেননি দেব। তখনও স্পষ্ট করেছিলেন নিজের অবস্থান। বলেছিলেন,  “কাউকে ছোট করে বড় হতে পারব না। এই প্রচেষ্টা কোনওদিনও করিনি। বন্ধু হতে যোগ্যতা লাগে, শত্রু হতেও যোগ্যতা লাগে। আমার শত্রু হতেও যোগ্যতা লাগবে। আমার মনে হয়, এখনও কেউ সেই জায়গায় পৌঁছায়নি।”

ব্রাত্য-সংযোজন

উৎসবের মরসুমে বক্স অফিসে দাউ দাউ করে চলছে দুটো সিনেমাই। এসবের মধ্যে অতি সম্প্রতি মুখ খোলেন ব্রাত্য। দেবের নাম না নিয়েই খোঁচা দিয়ে বলেন,  “দেব-কুণালের কী লড়াই হয়েছে, আমি জানি না। চারটেই বাংলা ছবি, চারটেই যদি ব্যবসা করে, খুবই ভাল। বাকি যেটা রাজনৈতিক অ্যাঙ্গেল রয়েছে, সিনেমার যাঁরা সুপারস্টার, তাঁরা কখনও অন্য দলে, অন্য নেতানেত্রীর অধীনে রাজনীতি করেননি।”

দেবকে ফোন মমতার

এতক্ষণ পর্যন্ত যে বিতর্ক ছিল কেবল চলচ্চিত্রের আঙিনায়, সেই বিতর্ক গণ্ডি পেরিয়ে এবার ঢুকে পড়ে রাজনীতির আঙিনায়। TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে শেষমেশ এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে দেবও। তবে তিনি স্পষ্টই বললেন, “আমার তখনও কিছু মনে হয়নি। যখন এসব হচ্ছিল। কিন্তু আমার ভিসন, বাংলা ছবি যেন গোটা দেশে রমরমিয়ে চলে। তখন কী কুণাল বলছে, কে কী বলছেন, সেটা মাথায় আসবে না। কারণ তাঁরা আমার স্বপ্নের সঙ্গী হতে পারছেন না।”

কথা প্রসঙ্গে বলে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রীর ফোন করার বিষয়টি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে তাঁর ঠিক কী কথা হয়েছে, সেটা নিয়ে বিশেষ কিছু একটা বলতে চাননি। শুধু বলেন, “আমাকে পরশু দিনই সিএম ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, দেখ, কুণাল কী বলছে… আমরা কিন্তু এসবের মধ্যে নেই। এই সবে দল নেই।” এর বেশি কথা না এগিয়েই দেব বলেন, “শুধু এটুকুই বলি, যদি কেউ নিজের দলের লোককেই কিছু বলে, তাহলে দলের নামটাই খারাপ হবে। আমরা তো সব একই দলের। এটাই গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে যা বলার, সেটা আমি জানি। ওনার কাছে খবরটা গিয়েছিল। আমি সত্যিই কৃতঞ্জ, উনিও এই ব্যাপারটায় খারাপ পেয়েছেন। আমিও দিদিকে বলেছি, খারাপ পাবেন না। আপনিও এই ব্যাপারটা নিয়ে ভাববেন না। আপনি এতো সাহায্য করেছেন আমায়। ছোট ছোট জিনিস নিয়ে কেন বিরক্ত করব! এরপর কী আমার ভাবা উচিত, ব্রাত্য দা, কুণাল দা কী বলছেন!”

দেব স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিলেন, বিতর্ক হোক, তিনি তাঁর লক্ষ্যে অবিচল। সঙ্গে এও বললেন, “আমার রাগ, অভিমান কারোর ওপর নেই। আমি খুব বেশি নেগিটিভিটি এন্টারটেইন করি না।” আর রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি আমার কাজটা ঘাটালে করছি, সেটা সেখানকার মানুষ জানে। এখানে ঢাক পেটানোর কিছু নেই। তবে সবটা তো আমার হাতে নেই। যতটুকু জানি, যতটুকু পারি, সবটাই করার চেষ্টা করছি।”