কলকাতা: দিল্লি থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচমকা বদলির নির্দেশ আসার পর থেকে তুঙ্গে উঠেছে রাজ্য বনাম কেন্দ্রের সঙ্ঘাত। তবে আলাপন ইস্যুতে দূরত্ব নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। কারণ তাঁদের ‘সেন্সর’ করল খোদ কেন্দ্রীয় বিজেপি। তাই মুখ্যসচিবের বদলির বিষয়ে মুখে কুলুপ আঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। যার নেপথ্যে রয়েছে স্বয়ং জেপি নাড্ডা-অমিত শাহদের নির্দেশ।
বিজেপি সূত্রে খবর, দলের তরফে এই ইস্যুতে কোনও মন্তব্য না করতে রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর এই নির্দেশের পেয়েই আলাপন নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেন দিলীপ ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্যরা।
এর আগে কেন্দ্র ও রাজ্য অথবা রাজ্য ও রাজ্যপাল সঙ্ঘাতে একাধিকবার মুখ খুলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্ঘাত নিয়েও প্রকাশ্যে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন বিজেপির একাধিক নেতা।
কিন্তু দিলীপ ঘোষ, সায়ন্তন বসুদের সেই সব মন্তব্যে বিতর্কও তৈরি হয়। তাঁদের বেশ কিছু ‘আলটপকা’ মন্তব্যে দলের ক্ষতিই হয়েছে বলে মনে করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই আলাপন ইস্যুতে যখন তুঙ্গে উঠেছে রাজ্য ও কেন্দ্রের চাপানউতোর, তখন সেই ইস্যু থেকে দূরত্ব তৈরি করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ অন্যান্য নেতা।
যেমন, শনিবারই আলাপন ইস্যুতে মন্তব্য করা ‘সাবধানী’ দিলীপ ঘোষের রবিবারের প্রতিক্রিয়া, ‘কিছু বলার নেই। সরকারি ব্যাপার।’ এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বাংলা সফরে রাজ্য প্রশাসন প্রোটোকল ভেঙেছে বলে কেন্দ্র এবং বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যে অভিযোগ করছেন, তাকে অত্যন্ত গুরুতর বিষয় বলে মনে করছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই ইস্যুতে রাজ্য সরকার বেকায়দায় রয়েছে বলেও অভিমত তাঁদের। তাই আলাপন ইস্যুতে রাজ্য নেতৃত্বকে মন্তব্য করতে নিষেধ করছেন তাঁরা। কারণ, এর মধ্যে কারও ‘আলটপকা’ মন্তব্যই ব্যুমেরাং হতে পারে এবং মমতার হাতে হাতিয়ার তুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। আপাতত ৩১ মে পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির কোনও নেতাকে মুখ্যসচিবকে নিয়ে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আলাপন-বিতর্কে এই কয়েক দিনে বিজেপি কোনও মুখপাত্রকে টেলিভিশন চ্যানেলেও বসতে দেয়নি। শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী শনিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করার নির্দেশ পান। সেখানেও অত্যন্ত মেপেজুপে মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর সেই সাংবাদিক সম্মেলনেও নজর রেখেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সারাক্ষণ সেই সাংবাদিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি হাজির ছিলেন বিজেপির ন্যাশনাল মিডিয়া ইনচার্জ অনিল বালুনি।