
কলকাতা: গত বুধবার, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন কাট টু শুক্রবার। মমতা-সাক্ষাৎ নিয়ে যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে দিলীপ ঘোষকে নিয়ে, দু’দিন বাদে TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এসে তা নিয়ে সরাসরি মনের কথা বললেন দিলীপ। এর আগেও বলেছেন, তবে এবার বললেন নিজের অভিমানের কথা। বললেন, ” আমার আর রাজনীতির দরকার নেই, লড়ার কথা নয় ভোট, লড়ব না, রাজনীতিও করব না।” গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁর আসন বদলে দেওয়া নিয়ে এতদিনে মুখ খুললেন তিনি।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুরের জেতা আসন থেকে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দিয়েছিল দল। পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে। জিততে পারেননি তিনি। তা নিয়ে সে সময়ে কম বিতর্ক হয়নি। শুক্রবার TV9 এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষের সামনে তোলা হয়েছিল সেই প্রশ্ন। প্রশ্ন করা হয়েছিল, “মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে দিল আপনাকে, অভিমান হয়নি?”
দিলীপ বললেন, ” অভিমান অবশ্যই হয়েছিল, তার থেকে বেশি স্বাভিমানী আমি। পার্টির লোক আমাকে কোনওদিনও জিজ্ঞাসা করেননি, কোথায় দাঁড়াব। বরং আমার সংগঠনমন্ত্রী দেড় বছর আগে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, দিলীপদা মেদিনীপুর ঠিক হ্যয় না? লড়বেন না? আমি বলেছিলাম, আপনি বললে লড়ব, নাহলে নয়।”
এ কথা প্রসঙ্গে সেই সময়কার বিস্ফোরক একটা ঘটনাপ্রবাহের কথা বললেন দিলীপ। তিনি দাবি করলেন, দলের কেউ নাকি তাঁকে আসন বদলের বিষয়ে কিছু বলেননি, বলিয়েছিলেন সঙ্ঘের লোককে দিয়ে! দিলীপ বললেন, “নাড্ডাজির সঙ্গে সেপ্টেম্বরে কথা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরকে ওখান থেকে বাদ দিয়ে বলা হয়, নিজের জায়গায় চলে যান ৬ মাস রয়েছে। আমাকে বলা হয়, সংগঠন থেকে আপনাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি বললাম ঠিক আছে। হঠাৎ দেড় মাস আগে বলা হল, আমাকে বর্ধমানে যেতে হবে। পার্টির বলার হিম্মত নেই কারোর। কে বলেছে, জানতেও চাইনি। আমাকে সঙ্ঘের লোকেরা বলেছিলেন।”
সে সময়ে কেন তাঁকে বর্ধমান দুর্গাপুরে পাঠানো হচ্ছে, ভীষণ হয়েছিলেন দিলীপ। নিজেই রীতিমতো বিপ্লব করেছিলেন। খোলাখুলি সে কথা বলতে গিয়ে পুরনো বিষয়ে অনেক কিছুই ফাঁস করলেন দিলীপ। বললেন, “আমি সে সময়ে বলেছিলাম, কেন? আমি কি টিকিট চেয়েছি? আপনারা আমাকে পাঠিয়েছিলেন সংগঠন করার জন্য। নেতা হওয়ার জন্য নয়। কিন্তু পাকে চক্রে আমি নেতা হয়ে গেলাম, কেউ নেই বলে। সুব্রত চট্টোপাধ্যায় অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি, আমি প্রেসিডেন্ট। দুজনেই সংগঠন বুঝি। সংগঠনের কাজ হয়ে গিয়েছে। ২০১৯ সালে ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছি।” সে সময়ে দিলীপ রাজনীতিও ছাড়তে চেয়েছিলেন, এতদিনে বললেন সেকথাও। দিলীপের কথায়, “আমার আর রাজনীতির দরকার নেই, লড়ার কথা নয় ভোট, লড়ব না, রাজনীতিও করব না। আমাকে মুক্তি দিন। কারণ যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটা ফেয়ার নয়। যেহেতু আমি ছোট থেকে আরএসএস করি, আমাকে সঙ্ঘের লোকেরা বলে দিলেন, মানে ওটা আদেশ।”