
কলকাতা: দিঘা সফরে গিয়ে দলের অন্দরে আক্রমণের মুখে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, দু’জনের প্রতিক্রিয়াতেই ধরা পড়েছে অসন্তোষ। সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট বলেছেন, দিলীপের সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত, দল অনুমোদন করে না। আবার দিলীপের এই মমতা-সাক্ষাতে অন্য রাজনীতির গন্ধ পেয়েছেন প্রবীণ নেতা তথাগত রায়। দিলীপকে রাজ্য সভাপতি করা দলের বড় ভুল বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বাংলায় দলীয় নেতৃত্বের একেবারেই সমান্তরাল চিন্তাভাবনা নিয়ে চলা দিলীপ ব্যাখ্যা দিলেন, আসলে তাঁর দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ আসলে দলের জয়! আর সেই জয়টাই ছিনিয়ে আনতে গিয়েছিলেন তিনি।
হিন্দুত্ব অস্ত্র! তাকে সামনে রেখেই বাংলায় ক্ষমতায়নের স্বপ্ন! কিন্তু এই পরিস্থিতি নিজের হিন্দুত্ব প্রমাণ করতে হচ্ছে দিলীপ ঘোষকে ! সেটাই বুমেরাং হচ্ছে। TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। প্রশ্নটা রাখা হয়েছিল তাঁর সামনে। আর সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সূত্রেই দিঘার মন্দিরের উদ্বোধনের দিনই তাঁর যাওয়ার অন্তর্নিহিত অর্থও ব্যাখ্যা করলেন দিলীপ।
দিলীপ বললেন, “ভেবে দেখুন, কত বড় জয় হল আমাদের!” উত্তরটা গুলিয়ে যাওয়ার মতো! কারণ যেখানে দলেরই মধ্যে ক্ষোভের মুখে পড়ছেন তিনি, সেখানে বলা হচ্ছে দল অনুমোদন করে না তাঁর কাজ, যেখানে কর্মীরা তাঁকে ঘিরে গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছে, তাহলে জয় কোথায়? দিলীপ দিলেন ব্যাখ্যা। বললেন, “বাংলা হচ্ছে সেকুলারদের জায়গা, অ্যান্টি হিন্দু, কমিউনিস্টরা বলত, আমাদের বিবেকানন্দ আর আরএসএসের বিবেকানন্দ এক নয়। তৃণমূল কী বলছে? বলছে, রামায়ণের রাম বিজেপির রাম এক নয়। তবুও ওদের রামনবমী করতে হচ্ছে। বিজেপি মন্দির পলিটিক্স করে। ওরা সাম্প্রদায়িক, এটা হতে পারে, এটাই তো বলে তৃণমূল। আজকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মন্দির পলিটিক্সে আসতে হচ্ছে। জয়টা কার? এত বড় জয় বিজেপির। দলের এত বড় জয় হল, দিলীপ ঘোষ দূরে থাকবেন? জয়টা ছিনিয়ে নিতে আমি গিয়েছিলাম, আর ছিনিয়ে এনেছি।”
দিলীপ এটাও বলেছেন, “এটা ঠিক, বিজেপি হিন্দুত্বের কথা বলে। বিজেপি মন্দির পলিটিক্স করে। আমি গর্বিত তা নিয়ে। ভারতবর্ষে থাকত, হিন্দুত্ব পলিটিক্স করব না, মন্দির বলব না, কোথায় বলব? এর বিজেপিকে সাপোর্ট করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমার পার্টি হিন্দুত্বের কথা বলছে, তাহলে দলের লোক তা থেকে পালাচ্ছে কেন? আমরা মন্দির তৈরি করেছি। ভোটের জন্য নয়, আর ভোট হয় না, সেটা অযোধ্যা প্রমাণ করেছে, কাশী প্রমাণ করেছে।”
আর বাংলায় এই রাজনীতি করতে অনেকে ‘ঘোলা জলে মাছ ধরছেন’ বলেও আভাস দিলেন দিলীপ। বললেন, “কোনওদিনও দলের নির্দেশের বাইরে যাইনি, যাবও না। কেউ যদি উদ্দেশ্য নিয়ে এজেন্ডা চালায়, তার বিরুদ্ধে লড়তেই হবে। পালিয়ে যাওয়া মানে হেরে যাওয়া।”