কলকাতা: সদ্যই গোয়া সফর সেরে এসেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে গোয়ায় প্রথম দফার প্রার্থীও ঘোষণা করেছে তৃণমূল। ফের আবারও গোয়া সফরে যেতে পারেন অভিষেক। কয়েকদিন ছাড়া ছাড়া অভিষেকের এই গোয়া সফর নিয়ে এ বার তোপ দাগলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
দিলীপের মন্তব্য, “এই সিজ়নে অনেকেই গোয়া বেড়াতে যান। তিনিও যাচ্ছেন। গোয়া ঘুরে এসে কী যে লাভ হল, তা তো বুঝলাম না। ত্রিপুরাতে তো আশা নেই তৃণমূলের। যদি গোয়াতে গিয়ে কিছু হয়। গোয়াতে কী হচ্ছে তাতে কী এসে যায়! বেল পাকলে কাকের কী! তৃণমূল তো ওখানে কেবল দর্শক।”
বস্তুত, গোয়ায় নির্বাচন আসন্ন। তার আগে প্রচারে শান দিচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি। বিনা যুদ্ধে জমি ছাড়তে নারাজ প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই। নির্বাচনী প্রচারের অঙ্গ হিসেবেই বৃহস্পতিবার গোয়ায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, গোয়ায় ২০১২ সালের পর এই প্রথমবার কোমর বেঁধে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিভিন্ন দল ভাঙিয়ে নিজেদের দল ভারী করেছে। বিশেষ করে কংগ্রেস থেকেই বহু নেতা-নেত্রী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। চলতি মাসেই কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের জোট নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছিল। পি চিদম্বরম তৃণমূলের সঙ্গে জোটের প্রস্তাবকে প্রাথমিকভাবে স্বাগত জানালেও পরবর্তীতে জোটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন।
ফলে, গোয়ার রাজনৈতিক সমীকরণে স্পষ্ট পৃথকভাবেই নির্বাচনে লড়তে চলেছে হাত ও ঘাসফুল শিবির। এই পরিস্থিতিতে, কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই নিশানা করেছেন অভিষেক। পাল্টা তোপ দেগেছে কংগ্রেসও। নির্বাচন উপলক্ষ্যে, গোয়ায় প্রথম দফার প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল।
প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন, লুইজিনহো ফেলারিও, চার্চিল অ্যালেমাও, কিরণ কেন্দালকর। এছাড়াও এই ১১ আসনে প্রথম প্রার্থী তালিকায় আছেন সন্দীপ অর্জুন ভজরকর, জগদীশ ভবে, সামিল ভলভাইকার, গণপৎ গাঁওকর, গিলবার্ট মারিয়ানো, জোস আর ক্যাব্রল, জর্সন ফার্নান্ডেজ। গোয়ায় তৃণমূলের কমিটিও ঘোষণা করেন অভিষেক।
তৃণমূলের গোয়া রাজ্য কমিটির সভাপতি করা হয়েছে কিরণ কান্দোলকরকে। কমিটিতে মোট ৯ নেতাকে সহ- সভাপতি করা হয়েছে। এই সহ -সভাপতির তালিকায় রয়েছে অভিনেতা তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেত্রী নাসিফা আলিও। কিছুদিন আগেই গোয়াতে ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। দল ছেড়েছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক অ্যালেইক্সো রেজিনাল্ডো লরেন্সো। ফলে, সবদিকে খুঁটিয়ে নজরদারি চালিয়ে ধীর পদক্ষেপে এগোচ্ছে তৃণমূল।
গোয়ার রাজ্য কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে ১২ জন নেতাকে। সম্পাদক হয়েছেন ২৯ জন। ১৮ জনকে করা হয়েছে এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য। গোয়া তৃণমূলের যুব সভাপতি করা হয়েছে জয়েশ শেঠগাঁওকরকে। তিনজন সহ-সভাপতি এবং সাতজন সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের মহিলা ইউনিটও তৈরি। সেখানে সভানেত্রী করা হয়েছে অভিতা বন্দোদকরকে। সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়ে মোট ১৩ জনের রয়েছেন এই কমিটিতে। কার্যত, সৈকত রাজ্যে আসর জমাতে তৈরি তৃণমূল তা বেশ স্পষ্ট বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।