কলকাতা: কেনই বা তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন, কেনইবা তাঁর ঘাসফুলে প্রত্যাবর্তন? রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কিছুই বলতে পারলেন না খোদ বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। শুধু তিনি বললেন, ‘বলতে পারব না। এটা তৃণমূলের ব্যাপারে।’
মঙ্গলবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে এসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে তিনি বলেন, “এটা তৃণমূলের ব্যাপার। আমরা তো আমাদের দলে রেখেছিলাম। আমরা দিল্লির অফিসে নেতাদের সঙ্গে দেখা করিয়েছিলাম। এখানকার সমস্ত ব্যাপারে ডাকতামও, সম্মানও দিতাম। তবুও তিনি কেন দল ছাড়লেন বলতে পারব না।”
প্রসঙ্গত, গত রবিবারই ত্রিপুরায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় তৃণমূলে ফিরেছেন রাজীব। জল্পনাটা শুরু হয়েছিল গত জুনে। একুশের নির্বাতনের ফল প্রকাশের পরপরই। এক শুক্রবারে, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল রায় (Mukul Roy)। আর তার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) বাড়িতে পৌঁছন আরও এক বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বিধানসভা ভোটের কয়েক দিন আগেই যোগ দিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। কয়েক দিন আগে তাঁর একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জল্পনা বাড়ে। এ বার সেই জল্পনা আরও উস্কে কুণাল ঘোষের বাড়িতে হাজির হন তিনি।
ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই নতুন করে রাজ্যে দলবদলের হাওয়া। ফরে ‘বেসুরো’ হচ্ছেন অনেক নেতাই। সেই দলেই ছিলেন রাজীব। সম্প্রতি হেস্টিংসে বিজেপির দলীয় বৈঠকে মুকুল রায়ের মতো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা যায়নি। সে দিন থেকেই জল্পনা শুরু। এরপর ফেসবুকে বিস্ফোরক পোস্ট। সেখানে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী লেখেন, “সমালোচনা তো অনেক হল….মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না।” হুবহু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই তিনি লেখেন, “আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস-এর মতো দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকা।” এরপর থেকেই রাজীবের মতিগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তবে কি পদ্ম শিবিরে ভাল নেই রাজীবও?
মুকুল রায়ের প্রত্যাবর্তনে পরই রাজীবের ফেরার সম্ভাবনা দেখছিল রাজনৈতিক মহল। কুণালের বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঘিরে জল্পনার পারদ চড়ে ক্রমশ। অবশেষে রবিবার সব জল্পনার অবসান। দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ঘরে ফেরার পরই বড় দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁর কাঁধে। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে কান পাতলেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, ত্রিপুরায় ঘাসফুলের শক্তি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তাঁকে। সূত্রের খবর, ত্রিপুরায় তৃণমূলের ইনচার্জ করা হচ্ছে রাজীবকে।
ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনে বিপ্লব দেবের গেরুয়া শিবিরকে চাপে ফেলতে এখন থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোনা যাচ্ছে, ত্রিপুরায় তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। এর আগেও বেশ কিছুটা সময় তৃণমূলের ত্রিপুরার দায়িত্ব সামলেছিলেন রাজীব বন্দ্য়োপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: Winter in Comming: কমছে তাপমাত্রা, কালীপুজোর আগে কি এক পশলা বৃষ্টি নাকি সরাসরি পড়বে শীত?