Dilip Ghosh: ‘লটারি নাকি! মন্ত্রী হওয়ার আগেই অনেকে মন্ত্রী হয়ে গিয়েছিলেন’
BJP: প্রথম থেকেই অন্য দল ভাঙিয়ে বিজেপিতে যোগদান করানো নিয়ে দিলীপ ঘোষ যে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না, দিলীপ-ঘনিষ্ঠরা তেমনটাই দাবি করেন।
কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয় তো হয়েছিলই, উপনির্বাচনেও কার্যত সবুজ ঝড়। ৬ মাসের মধ্যে দুটি জেতা কেন্দ্রও উপনির্বাচনে হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির (BJP)। কেন এই বিপুল পরাজয়ের নেপথ্যে বারবার ‘তৃণমূলী সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে আঙুল তুললেও অবশেষে হারের নেপথ্যে দলের বিরুদ্ধেই কার্যত ক্ষোভ উগড়ে দিলেন খোদ বিজেপির সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
বিজেপির কর্মীসভা থেকে দিলীপ বলেন, “লটারি নাকি, মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইলেই মুখ্য়মন্ত্রী হওয়া যাবে! যদিও আমাদের দলের অনেক নেতাই তা ভেবেছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার আগেই মন্ত্রী হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন দাদারা মন্ত্রী হবেন, আমরা কামাব। এদিকে আমাদের দল নির্বাচন জয়লাভ করতে এসেছিলাম। নির্বাচনে জয় পেতে গেলে রাস্তায় নেমে কাজ করতে হবে। সংগঠন করতে হবে।”
এখানেই থামেননি দিলীপ (Dilip Ghosh)। বিজেপি নেতার আরও সংযোজন, “ভোটে জয়লাভ হবে কী করে? ক’টা পঞ্চায়েত আমাদের হাতে রয়েছে। বেশ, পঞ্চায়েত বাদ দিলাম। কয়টা পুরসভঙা আমাদের হাতে রয়েছে? দেড়শো-দু’শোটা পুরসভার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন কাউন্সিলর রয়েছেন। তা দিয়ে কি নির্বাচন জেতা যায়। আমরা তো জিতব বলেই পরিকল্পনা নিয়ে নির্বাচনে এসেছিলাম। বারবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ দলের জন্য ভাল হয়নি।”
এই প্রথম নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন বিজেপি নেতা। তাতে লেখা, ‘অনেক দালাল নির্বাচনের আগে আমাদের দলে ঢুকে গিয়েছিলেন। কিছুজন গিয়েছেন, কিছু এখন রয়েছেন। তাঁরা উৎপাত করছেন। সবাইকে বাদ দেব। এরা চায় না বিজেপি শক্তিশালী হোক।’
প্রথম থেকেই অন্য দল ভাঙিয়ে বিজেপিতে যোগদান করানো নিয়ে দিলীপ ঘোষ যে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না, দিলীপ-ঘনিষ্ঠরা তেমনটাই দাবি করেন। তিনি প্রথম থেকেই বলে এসেছেন, ক্ষমতার জন্য বিজেপিতে এলে তাঁদের টিকে থাকা মুশকিল। এদিনও তাঁর পোস্টে সে কথাই উঠে এল। কারও নাম করে কিছু না লিখলেও, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া যে সমস্ত নেতারা দলের কোনও কাজে আসেন না, দিলীপের লক্ষ্য তাঁরাই।
তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গেলেও এখনও এমন বহু নেতা আছেন, যাঁদের দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায় না। এমনকী মিটিং মিছিলেও থাকেন না তাঁরা। সংগঠনকে মজবুত করার পক্ষে এ ধরনের ঘটনা যে অন্তরায় তা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তাঁরা ভিতরে ভিতরে দলের ক্ষতি করছেন বলেই দাবি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি পরিষ্কার এদিন হুঙ্কার দেন, এবার সেই সব নেতাদের তাড়ানোর সময় এসেছে।
কিছুদিন আগেও দলীয় বৈঠকে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন দিলীপ ঘোষ ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কাটোয়ায় কার্যত বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। তা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনায় এক সময় মেজাজ হারান দিলীপ। এ বার সরাসরি নিজ দলের বিরুদ্ধে দিলীপের এই ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসায় প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে। যদিও এই ঘটনায় ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিং-কে ফোন করা হলে তিনি স্পষ্টই বলেন, “দিলীপবাবুর মন্তব্য নিয়ে আমি কোনও কথা বলতে পারব না।”
আরও পড়ুন: Soumitra Khan: ‘আপনি তো বিজনেসম্যান, কিছুই বোঝেননি…সেরেল্যাক খান মাঝে মাঝে’