কলকাতা : নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে কার্যত তুলোধনা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Supremo Mamata Banerjee)। এবার সেই নিয়ে মমতাকে পাল্টা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর বক্তব্য়, কর্মসংস্থানে বিষয় থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতেই বিজেপি এবং রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলীপ বাবু বলেন, “গ্রুপ ডি থেকে শুরু করে, আশাকর্মী, ডাক্তার, নার্স, পুলিশের লোকেরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারা নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছেন। তাঁদের নিয়োগ হচ্ছে না। এই তো অবস্থা। মানুষকে তো কিছু বলতে হবে। সেই জন্য বিজেপির বিরুদ্ধে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দেগে, মানুষের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আর সেই সঙ্গে মার্কেটে মিডিয়াকে গরম করে রাখছেন।”
বুধবার নেতাজি ইন্ডোরে দলের সাংগঠনিক নির্বাচনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র ও রাজ্যের তুলনা করতে গিয়ে নোটবন্দি ও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, কেন্দ্র নোট বন্দী করে দেশবাসীকে সমস্যায় ফেলেছে, আর এদিকে তৃণমূল সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করে মানুষের ঘরে ঘরে টাকা পৌঁছে দিচ্ছে। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “নোটবন্দিতে যে ওঁনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) ক্ষতি হয়েছে, সেটা এর থেকে বোঝা যায়। এটা তাই তিনি এখনও ভুলতে পারেননি। সারা দেশ ভুলে গিয়েছে। ভ্রষ্টাচার দূর হয়েছে আজকে। জিরো টলারেন্স করেছে (কেন্দ্র)। কেবল পশ্চিম বাংলায় ভ্রষ্টাচার হচ্ছে। কারণ, ওনার যে টাকা মাটির তলায় ছিল, সেটা চলে গিয়েছে। সেই কষ্টটা ভুলতে পারেন না বলেই নোটবন্দির কথা বলছেন। নোটবন্দিতে দেশ এখন ডিজিটাল ইন্ডিয়াতে চলে গিয়েছে। এটা তিনি বুঝতে পারছেন না। কারণ, অনেক পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।”
এর পাশাপাশি, পেগাসাস ইস্যুতেও কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। মমতার অভিযোগ, বিজেপির বিরুদ্ধে যখনই কথা বলা হয়, তখনই বিজেপি ‘নাভিশ্বাস আর পেগাসাস’ শুরু করে দেয়। এমনকী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরেরও ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন মমতা। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য – “পেগাসাসটা এল কোথা থেকে? আমরা তো কোনওদিন বাবার জন্মেও শুনিনি। উনি শুনিয়েছেন। ওনার খুব বিশ্বস্ত রাজীব কুমারকে ২০১৭ সালে পাঠিয়েছিলেন ইজরায়েলে। একবার গিয়ে বিফল হয়ে ফিরে এসেছেন, দ্বিতীয় বার সেটিং করে নিয়ে এসেছেন। সেই পেগাসাস দিয়ে প্রথম ফোন ট্যাপিং উনিই (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) শুরু করেন। আর সেই ট্যাপিংয়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন মুকুল রায়, যখন তিনি আমাদের দলে ছিলেন। সেই সব পাপ করেছেন তিনি, তা বুঝতে পেরেছেন। তাই সেই জিনিসটা আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে এখন নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করছেন এবং আমাদের বদনাম করার চেষ্টা করছেন।”