কলকাতা: দু’দিন আগে হরিদেবপুরে প্রোমোটার-রাজের শিকার হন মহিলা। প্রাণ যায় তাঁর। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার প্রোমোটারের প্রতারণার অভিযোগ উঠল কেষ্টপুরে। ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও সেখানের একটি আবাসনের রেজিস্ট্রি হয়নি। আর রেজিস্ট্রি না থাকায় ফ্ল্যাট ছাড়ার নির্দেশ জেলা শাসক দফতরের। একাধিকবার প্রোমোটারকে তাগাদাও দিয়েছেন তাঁরা। তবুও কাজ হয়নি। এসবের মধ্যে পাঁচ বছর আগে আবার রাজেশ জসওয়াল নামের ওই প্রোমোটারের মৃত্যু হয়। ফলত বিপাকে প্রায় ২৮টি পরিবার।
সূত্রের খবর, গতবছরের মাঝামাঝি সময় ওই ২৮টি পরিবারের মধ্যে থেকে ৬-৮টি পরিবারের কাছে জেলাশাসকের দফতরের নোটিস আসে। সেখানে বলা হয় ফ্ল্যাট খালি করে দিতে হবে। বাকি যে কটি ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি হয়নি সেই ফ্ল্যাটগুলিতেও নোটিস আসবে বলে জানতে পেরেছেন বাসিন্দারা। সেই কারণে ছাদ হারানোর ভয়ে রয়েছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, বাসিন্দারা আদালতের ডেট রিকভারি ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হয়েছেন। গত ১৫ ই ডিসেম্বর তার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে তা হয়নি।
জানা গিয়েছে, এই ফ্ল্যাটগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে বেশিরভাগই অবসর প্রাপ্ত। জীবনের শেষ সঞ্চয় দিয়ে এই ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। এখন কোথায় যাবেন কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। গোটা বিষয়টি পুলিশ থেকে শুরু করে কাউন্সিলর সকলকেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।
তবে মৃত্যুর পরও রাজেশের একাধিক কীর্তি ফাঁস হয়েছে। শুধু ব্যাঙ্কের ঋণ মেটানোর অনীহা নয়। আবাসান প্রজেক্টের গোড়াতেও ছত্রে-ছত্রে গলদ রয়েছে। পার্টনারশিপের নামে নেওয়া হয়েছে ঋণ। আর যাঁদের পার্টনার হিসাবে দেখানো হয়েছিল তাঁরা আদতে কিছুই জানেন না।
এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর বিকাশ নস্কর বলেন, “রাজেশ জয়সওয়াল জীবিত থাকাকালীন ১-২ বছর আগে রেজিস্ট্রির কথা জানিয়েছিলেন। তারপর ডাকা হয়েছিল। তখন ফ্ল্যাটের লোকজন আসেনি। পরে যখন ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়েন তখন আমার কাছে আসে আমি ওদের পাশে থাকার যতটা চেষ্টা করেছি।” ভুক্তভোগী সোমনাথ চৌধুরী বলেন, “আমরা অনেক লোক মিলে বহুবার প্রোমোটারকে বলেছি। কখনই বলেনি যে অন্যের কাছে বন্ধক আছে। আমরা তখন জানতে পেরেছি যথন ব্যাঙ্কের নোটিস এসেছে। তথন ওরা জানায় এটা অন্য লোকের ফ্ল্যাট আপনারা কীভাবে আছেন?” সুমনকুমার মুখোপাধ্যায় নামে আরও এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি রিটায়ার্ড পার্সন। আমার সম্সত পুঁজি জমিয়ে এই ফ্ল্যাট কিনেছি। এখন উঠে যেতে বললে যাব কোথায়?”