কলকাতা: শেষবেলায় স্বস্তিতে দমদম পার্ক ভারতচক্রের (Dumdum Park Bharat Chakra) পুজো উদ্যোক্তারা। গোটা পুজোটাই বিতর্কে কেটেছে ভারতচক্রের। থিমের পুজোয় প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে জুতোয়। যা ঘিরে তুমুল হইচই শুরু হয়। আদালত (Calcutta High Court) অবধি টেনে নিয়ে যাওয়া হয় এই পুজোকে। তবে বৃহস্পতিবার নবমীর দিন কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল দমদম পার্ক ভারতচক্রের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় এখনই তারা কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। মামলাকারীদের দাখিল করা সোশ্যাল মিডিয়ার রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ করবে না আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ জানিয়েছেন, আগামী ২৫ অক্টোবর এই মামলায় রিপোর্ট দাখিল করবে পুলিশ। তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি কৌশিক চন্দ জানতে চান, “এই পুজো কমিটির থিমের নাম তো ধান দেব না, মান দেব না। তা হলে এর সঙ্গে জুতো কী ভাবে সম্পর্কযুক্ত?” তারই জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌম্যেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “জালিয়ানওয়ালাবাগ থেকে শুরু করে যেখানেই কোনও গণ আন্দোলনের উপর আক্রমণ নেমে আসে। সেখানেই লড়াইয়ের পর প্রচুর জুতো পড়ে থাকতে দেখা যায়। উত্তর প্রদেশেও যখন আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর আক্রমণ হচ্ছিল সেখানেও মৃত কৃষকদের জুতো পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। তাই এই থিমে জুতো ব্যবহৃত হয়েছে।”
আদালতের শুনানি পর্বে এদিন উঠে আসে, তদন্তে দেখা গিয়েছে মণ্ডপের দু’টি অংশ। প্রথম অংশ পুজো মণ্ডপ, দ্বিতীয় অংশটি থিম নির্ভর সাজানো। থিমের সঙ্গে পুজো মণ্ডপের অর্থাৎ যেখানে প্রতিমা রেখে পুজো হচ্ছে তার দূরত্ব ১১ ফুট। তাই কোনওভাবেই পুজো মণ্ডপকে অপমানিত করার যুক্তি প্রমাণিত হচ্ছে না। একই সঙ্গে এদিন আদালতকে রাজ্য জানায়, দেশের প্রতিটি মণ্ডপের বাইরেও দর্শনার্থীদের প্রচুর জুতো পড়ে থাকে।
দমদম পার্ক ভারতচক্র পুজো কমিটির এবারের থিম ‘ধান দেব না, মান দেব না’। সেখানে প্যান্ডেলের একটি অংশ সাজানো হয়েছে জুতো দিয়ে। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। জনৈক আইনজীবী পৃথ্বীজয় দাস এই পুজো মণ্ডপের থিমের বিরোধিতা করে পুজো উদ্যোক্তাদের আইনি নোটিস পাঠান। তাঁর বক্তব্য, এতে সনাতনী হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগকে আঘাত করা হচ্ছে। অসম্মান করা হচ্ছে দুর্গাকে। অবিলম্বে এই পুজো মণ্ডপ থেকে জুতো সরানোর দাবি তোলেন তিনি।
যদিও প্রথম থেকেই পুজোর উদ্যোক্তারা নিজেদের বক্তব্যে অনড়। তাঁদের কথায়, কৃষক আন্দোলন, সন্ন্যাসী আন্দোলন, তেভাগা, কৃষক আন্দোলন তুলে ধরা হয়েছে এই থিমের মাধ্যমে। কৃষক আন্দোলনকে তুলে ধরতেই প্রতীকী হিসাবে এই জুতোর ব্যবহার করা হয়েছে মণ্ডপে। সেটা মূল মণ্ডপ থেকে অনেকটা দূরেও। দুর্গা মূর্তির কাছে এমন কোনও সজ্জা হয়নি। এখানে বিতর্কের কোনও অবকাশই নেই।
আরও পড়ুন: Durga Puja: দশমীর দিন বাঙালিরা মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায়; এর তাৎপর্য জানা আছে কি?