Durga Pujo 2021: নিজের দফতরেরই গাইডলাইন মানেননি দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু! ‘বুর্জ খলিফা’ নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য
Kolkata: শ্রীভূমির পুজো উদ্যোক্তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, "কোভিডের সময়ে আমার উদ্দেশ্য হল পুজো হচ্ছে হোক, ভিড় করতে দেব না।
কলকাতা: ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন দলের সাংসদ। আর তাঁরই মন্তব্যের রেশ ধরে শ্রীভূমির পুজো নিয়ে প্রকাশ্যে এল আরেক বিস্ফোরক অভিযোগ। কেবল বিমান চলাচলেই নয়, শ্রীভূমির (Srebhumi Pujo 2021) পুজোতে মানা হয়নি দমকল বিভাগের গাইড লাইন। অথচ এই পুজোরই প্রধান উদ্যোক্তা রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু (Sujit Bose)।
ভিআইপি রোড সংলগ্ন এই পুজোর লেজার আলোর কারণে বিমান উড়ান এর সমস্যা তৈরি হচ্ছিল । অভিযোগ জানায় বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ । এর পর আর ও একটি তথ্য সামনে আসায় ফের অস্বস্তিতে শ্রীভুমির পুজো । রাজ্য দমকল বিভাগের গাইড লাইনে পুজোর মণ্ডপের অনুমতির ক্ষেত্রে ৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে প্যান্ডেল এর সর্বোচ্চ উচ্ছতা ৪০ ফুটের বেশি হবে না কখনই । প্রশ্ন উঠছে বুর্জ খলিফার উচ্চতা নিয়ে । কীভাবে নিজে এই পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা রাজ্যের দমকলমন্ত্রী হওয়ার পর ও তারই দফতরের নির্দেশিকা কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সুউচ্চ বুর্জ খলিফা তৈরি করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। এ প্রসঙ্গে দমকলমন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বুর্জ খলিফার আলো বন্ধের পর থেকে চোটে রয়েছেন সুজিত বসু। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “সুজিত এমনিতে ভালো ছেলে। কিন্তু এই ব্যাপারে আরও একটু বেশি রেশপনসিবেল হওয়া উচিত ছিল।”
বিতর্কে উস্কে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইঙ্গিত শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের পুজোয় কিছুটা হলেও আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। কল্যাণের কথায়, “আইন অনুযায় বিমানবন্দরের ২০ থেকে ২৫ কিমি রেডিয়াসে কোনও রকম কনস্ট্রাকশন বা লাইট অনুমতি নিয়ে করতে হয়। এটা এক্ষেত্রে করা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। কেন আমি এত ভিড় ডাকব?”
শ্রীভূমির পুজো উদ্যোক্তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কোভিডের সময়ে আমার উদ্দেশ্য হল পুজো হচ্ছে হোক, ভিড় করতে দেব না। ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট একটা বড় ব্যাপার। এমন কিছু একটা করা উচিত নয়, যেখানে লক্ষ লক্ষ লোক এল। তাতে তো আমাদের সরকারি উদ্দেশ্যটাই ব্যাহত হয়েছে। খোলা মেলা করে রাখা উচিত ছিলো।”
গোটা ঘটনার সূত্রপাত অষ্টমীর সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ। মণ্ডপে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ। এরপর বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে অনুরোধ করা হয় যাতে বুর্জ খলিফার আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বচসা, কথা কাটাকাটি হয় পুলিশের। মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধের সিদ্ধান্ত, তুঙ্গে ছিল কথা কাটাকাটি, পুজো বন্ধ করে ঘট পুজো করার ভাবনা, মণ্ডপ থেকে পুলিশ প্রহরা তুলে নেওয়ার আর্জি- এই সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি অষ্টমী থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অষ্টমীতে মাঝরাত গড়ানোর পরই সাংবাদিক সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে দমকলমন্ত্রী তথা পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সুজিত বসু জানিয়ে দেন, আজ, অর্থাত্ নবমী থেকে কোনও দর্শনার্থী শ্রীভূমি পুজো মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন না। তবে পুজোর অনান্য উপাচার স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে।
শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী একাধিক পুজোর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এবারের সব চর্চার শিরোনামে উঠে এসেছে বুর্জ খলিফার নাম। নেপথ্যে উঠে এসেছে মন্ত্রী সুজিত বসুর নামও। একা বুর্জ খলিফাই জনস্রোত টেনেছে গোটা মহানগরীর। বিতর্কও অবশ্য কম হয়নি। কিন্তু সব বিতর্ক মাত্রা ছাড়িয়েছে অষ্টমীর রাতে। কার্যত মণ্ডপের দর্শনার্থীদের জন্য ‘নো এন্ট্রি’ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন মন্ত্রী।
সুউচ্চ এই মণ্ডপের স্পটলাইটে বিমান অবতরণে অসুবিধা হচ্ছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভিড়ে করোনাভাইরাস–বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে বলেও খবর। এবার তাতে আরও ঘি ঢাললেন মন্ত্রীরই দলের সাংসদ।