কলকাতা: বিএড কলেজগুলি থেকে মানিক ভট্টাচার্য যে টাকা নিতেন, সে তথ্য আগেই সামনে এনেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আর এবার আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করল ইডি। শুধু মানিক নয়, কলেজগুলিকে অনুমোদন পাইয়ে দিতে নাকি টাকা যেত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতেও। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি করেছে ইডি। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (NCTE)-এর একাংশও সেই দুর্নীতিতে যুক্ত ছিল বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
মূলত তাপস মণ্ডলের বয়ানকে হাতিয়ার করেই আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই এনসিটিই-র সদস্য ছিলেন মানিক। বিএড, ডিএলএড বা প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং কলেজের চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে হলে এনসিটিই-র অনুমোদন প্রয়োজন। চার্জশিটে পেশ করা তথ্যে দাবি করা হয়েছে, মানিক এই কাউন্সিলের সদস্যপদে থাকার সুবিধা কাজে লাগিয়ে রাজ্যে এই ধরনের বহু প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পাইয়ে দিয়েছেন টাকার বিনিময়ে।
বিএড, ডিএলএড বা প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং কলেজের চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে হলে প্রথমে শিক্ষা দফতরের এনওসি বা অনুমোদন প্রয়োজন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেই এনওসি পাইয়ে দিতেন বলে দাবি ইডি-র। আর এনসিটিই-র অনুমোদনের ব্যবস্থা করে দিতেন মানিক। তারপর ওই কলেজগুলিকে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তিকরণও বা অ্যাফিলিয়েশনও করিয়ে দিতেন পার্থ। ইডি-র গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ওই এনওসি এ বাবদ পার্থ নিতেন ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। আর মানিক নিতেন ২ থেকে ৫ লক্ষ টাকা।
মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আগেই জানা গিয়েছে, ডিএলএড-এ যাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে চাইতেন, তাঁদের থেকে নিয়মিত ভাবে টাকা নেওয়া হত। ডিএলএড-এর যে ৬০০টি কলেজ রয়েছে, ভর্তির জন্যই টাকা নেওয়া হত বলে অভিযোগ। যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কলেজে নাম নথিভুক্ত করতে পারতেন না, তাঁদের অফলাইনে নাম নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করে দিতেন মানিক। তাপস মণ্ডল দাবি করেছেন, এভাবে অন্তত ২০ কোটি টাকা তোলা হয়েছিল।