কলকাতা: পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের দুই হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। একদিকে শ্রীভূমিতে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে তল্লাশি চলছে। অন্যদিকে বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের বৌবাজার বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়িতেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তাপসের বাড়িতে যখন ইডির আধিকারিক, তখন স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিবসে তাঁর জন্মভিটায় উপস্থিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুদীপের সঙ্গে তাপসের অম্লমধুর সম্পর্ক সকলেরই জানা। স্বভাবতই তাপসের বাড়িতে ইডি হানা নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছিল সুদীপের কাছে।
খুব সুকৌশলে এ প্রশ্ন এড়িয়ে যান উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং তিনি বলেন, “স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিবসে এই জন্মভিটাতে এসেছি। এই অস্থির সমাজ ব্যবস্থা, অস্থির দেশের পরিস্থিতিতে তাঁর দিকনির্দেশ আমাদের কাছে সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি স্বামী বিবেকানন্দকে প্রণাম জানাতে এসেছি। দলের বিষয়ে সরকারি মুখপাত্ররা বলবেন।”
সুদীপের সঙ্গে তাপসের সম্পর্কের দ্বৈরথ প্রথম সামনে আসে গতবছর পুজোর সময়। উত্তর কলকাতার এক বিজেপি নেতার বাড়ির পুজোয় গিয়েছিলেন সুদীপ। যার নিন্দা করেন তাপস রায়। পাল্টা খোঁচা দেন সুদীপও। সেই ‘লড়াই’ এখনও থামেনি। কিছুদিন আগেই তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে সুদীপ যখন বলেছিলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন থাকবেন না, বাংলার অবস্থা ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো হয়ে যাবে।” তাপসকে বলতে শোনা গিয়েছিল, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি না করে অভিনয় করলে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেতেন। অস্কার না পেলেও নমিশেন পেতেন। আরও উচ্চগ্রামে উঠেছিল সেই আক্রমণ।
সেই তাপসের বাড়িতেই এদিন সাত সকালে পৌঁছয় ইডি। বরানগরের বিধায়ক তিনি। আর বরানগর পুরসভা ইডির স্ক্যানারে। সূত্রের খবর, বরানগরের কাউন্সিলর তথা চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক তাপস রায় ঘনিষ্ঠ। এদিকে ইডির খাতায় দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পুরসভাগুলির মধ্যে বরানগর তিন নম্বরে। নিয়োগ নিয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এখানে। সেখানে তাপস রায়ের কোনও যোগ আছে কি না তা জানতেই এদিন তাঁর কলকাতার বাড়িতে ইডির হানা বলে সূত্রের খবর।