কলকাতা: ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘর্ষ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Medical College Kolkata) ইডেন হাসপাতাল রোডে ৫ নম্বর গেটের সামনে। সংঘর্ষে আহত হন ১০ থেকে ১২ জন। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরাল হয়ে ওঠে যে তা সামাল দিতে নামানো হয় র্যাফ। হাসপাতালেরই এক কর্মীর বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ ওঠে রবিবার দুপুরে। এই ঘটনা ঘিরেই রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কলকাতা মেডিক্যালের পাঁচ নম্বর গেট চত্বর। এরপরই ৫ নম্বর গেটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে বউবাজার থানার পুলিশ।
হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী ও গ্রুপ ডি স্টাফদের কোয়ার্টার রয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৫ নম্বর গেট চত্বর এলাকায়। এখানেই সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিং, করোনার চিকিৎসা করা হয়। ইডেন হসপিটাল রোডও বলা হয় এই চত্বরকে। অভিযোগ, দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ সেখানেই গোলমালের সূত্রপাত হয়। কোয়ার্টারের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এই এলাকা দিয়ে মেয়েরা হেঁটে যেতে পারেন না। সব সময় কটুক্তির শিকার হতে হয়। সেই অভিযোগ ওঠে ভিকি আলি নামে এক অস্থায়ী কর্মী নেতার বিরুদ্ধে। এমনও অভিযোগ ভিকি শাসকদলের যে ইউনিয়ন রয়েছে তার নেতা।
অভিযোগ, এদিন দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৫ নম্বর গেটের সামনে তুমুল হই হট্টগোল শুরু হয়। সোডার বোতল ছুড়তে থাকে একদল দুষ্কৃতী। ভিকিই এর মদতদাতা বলে অভিযোগ ওঠে। স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা আবাসিকরা জানান, একদল দুষ্কৃতী এখানে বেশ কয়েকদিন ধরেই দাপাদাপি শুরু করেছে। দিনের পর দিন ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন মহিলারা।
তারই প্রতিবাদ করা হয় রবিবার। এরপরই দুই পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। মুহূর্তে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে মেডিক্যালের পাঁচ নম্বর গেট চত্বর। এই ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন রক্তাক্ত হন। কারও পা কেটে গিয়েছে। কারও আবার আঘাত লেগেছে বুকে। কারও হাতে ক্ষত হয়েছে। ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হয়। নামানো হয় র্যাফও।
এই ঘটনার পর গোটা রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে কাচের বোতল। স্টাফ কোয়ার্টারের বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু বোতল ছোড়া বা হামলা নয়, চার থেকে পাঁচ রাউন্ড গুলিও ছোড়ে তারা। স্টাফ কোয়ার্টারের এক বাসিন্দার কথায়, “আমাদের চুক্তি ভিত্তিক বা সরকারি কাজ করি এই হাসপাতালে। থাকি এই আবাসনেই। আমাদের এ নিয়ে দু’ তিনবার আমাদের উপর হামলা হল। বাইরে একটা ক্লাব বানিয়েছে। কতগুলো সমাজ বিরোধী সেখানে বসে থাকে। আমাদেরও কিছু ছেলে থাকে ওদের সঙ্গে। মেয়েরা বাইরে বের হলেই টোন টিটকিরি করতে থাকে। পরিবেশটা একেবারে নষ্ট। এখান দিয়ে কেউ যাতায়াত করার সাহস পায় না।”
দুপুরে ঘটনা ঘটলেও সন্ধ্যা পার করেও সেই গোলমালের রেশ রয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে এলেও হাসপাতালের বাইরে মোতায়েন করা রয়েছে পুলিশ। স্টাফ কোয়ার্টারের বাসিন্দারাও ঘরের বাইরেই রয়েছেন।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ২০ বছর আমার জ্বর হয়নি, আজকাল অল্পেতে ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে