কলকাতা: রেজাল্ট সমস্যা মেটানোর দাবি পড়ুয়াদের। কিন্তু সেই দাবি জানাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে (University of Calcutta) এসে নজিরবিহীন ‘আপ্যায়ন’-এর সাক্ষী রইল ডায়মন্ড হারবার ফকিরচাঁদ কলেজের পড়ুয়ারা। সোমবার উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন পড়ুয়ারা। রাতভর এই বিক্ষোভ অবস্থানের কথা ঘোষণা করেন তাঁরা। এরপরই বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী পড়ুয়াদের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ঘর খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ফকিরচাঁদ কলেজের ছাত্র, ছাত্রীরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরের সামনে পূর্ণাঙ্গ রেজাল্ট প্রকাশের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। তাঁদের মূলত দাবি, অবিলম্বে ফকিরচাঁদ কলেজে স্নাতকোত্তরে রেজাল্ট সমস্যার সমাধান করতে হবে। রিভিউ নয়, অবিলম্বে পুনর্মূল্যায়ণ করে দ্রুত ফল প্রকাশ করতে হবে। অবিলম্বে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে ছাত্রদের সঙ্গে যৌথ আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করতে হবে।
এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়ে দেন পড়ুয়ারা। এরপরই এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের কথা জানায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবস্থানকারীদের জন্য দু’টি ঘর খুলে দেওয়া হয়। বলা হয়, একটি ঘরে ছেলেরা থাকবেন, অন্য ঘরে মেয়েরা। পাশাপাশি প্রত্যেক অবস্থানকারীর জন্য রাতের খাবারেরও ব্যবস্থা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
একইসঙ্গে পড়ুয়াদের দাবিদাওয়ার আশু সমাধানের বিষয়ে মঙ্গলবারই বৈঠকে বসছে তারা। সকাল ১১টায় আলিপুরে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে কলেজের প্রিন্সিপাল ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদেরও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। যে খাতায় পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিয়েছেন, সেগুলি দেখা হবে। সেখানে যদি প্রমাণিত হয়, পড়ুয়াদের দাবি ন্যায্য, তা হলে পড়ুয়াদের সমস্যাও মিটবে বলেই আশ্বাস দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
গত কয়েকদিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হোক কিংবা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র বিক্ষোভের জেরে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি, টিকাকরণ, ফলপ্রকাশ, মূল্যায়ণ পদ্ধতির স্বচ্ছতা-সহ একাধিক দাবি নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলিতে সরব হতে দেখা গিয়েছে পড়ুয়াদের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নমনীয় মনোভাব দেখিয়েই সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছে।
তবে সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটল তা কার্যত নজিরবিহীন। রাতভর পড়ুয়ারা আন্দোলন করবেন বলে, তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা পর্যন্ত করে দেওয়া, অতি সম্প্রতি অন্তত এমনটা কোথাও ঘটেছে বলে মনে করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: Tripura TMC: ত্রিপুরায় বার বার কর্মসূচি বাতিল অভিষেকের, এবার নতুন ‘স্ট্র্যাটেজি’ তৃণমূলের