কলকাতা: গ্রেফতারির এক বছরের মাথায় মুক্তির জন্য পদক্ষেপ করতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। গত বছর ২৩ জুলাই ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ। গতকাল রবিবার তার এক বছর হল। সোমবার আলিপুর সংশোধনাগারে তোলা হয় পার্থকে। সশরীরে হাজিরা দেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেই পার্থর কাতর আর্তি মুক্তির জন্য। এর আগে একাধিকবার তিনি জামিনের আবেদন করেছেন। তবে তা আদালতে। এই প্রথমবার পার্থকে বলতে শোনা গেল, মুখ্যমন্ত্রী যেন এ নিয়ে পদক্ষেপ করেন।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি চাই অবিলম্বে জেল থেকে বেরোতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করব, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে গেলে যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (জয়ের জন্য সবাই যেখানে সমান ও স্বচ্ছ সুযোগ পান) দরকার, আমি সেটা চাই। আমি নির্দোষ, আমি নির্দোষ। আমি নিয়োগকর্তা নই, আমি সুপারিশ কর্তা নই। কোনও ব্যাপারে আমি ছিলাম না। সিবিআই কী বলছে আমার জানার দরকার নেই। অনেক জায়গায় অনেক কথা বলে। অনেক কথা বলেই কিন্তু একদিন আমরা এক থেকে ক্ষমতায় এসেছি। এটা ভুলে গেলে চলবে না।”
আদালত চত্বরে এদিন সাংবাদিকরা পার্থকে প্রশ্ন করেন, এত টাকা উদ্ধার হয়েছে এগুলি কার? জবাবে পার্থ বলেন, “যারা প্রশ্ন তুলেছে তারাই বলুক।” একইসঙ্গে দল নিয়ে তাঁর এই মুহূর্তের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব বলেন, “দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। সকাল থেকে ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া করে যাচ্ছেন, ইন্ডিয়া মানেই ভারত, ভারত মানেই ইন্ডিয়া। বাংলার মানুষ যেখানে, সেখানেই তৃণমূল।”
তবে সূত্রের খবর, এদিন আদালতে পেশ করার সময় ঘনিষ্ঠমহলে দল নিয়ে কিছুটা অভিমানের সুর শোনা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। কেন তাঁর হয়ে এই এক বছরে দলের কেউ কোনও কথা বলল না, তা নিয়ে খেদ প্রকাশ করেন। কেনই বা মমতা-অভিষেক তাঁকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বলেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বলেই সূত্রের দাবি। একইসঙ্গে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে একটিবারও তাঁর নাম উচ্চারিত না হওয়া নিয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন পার্থ। বোঝান, দলের এখন সুদিন। তিনি ছিলেন দুর্দিনের সঙ্গী।
যদিও প্রথম থেকেই পার্থ নিয়ে তৃণমূল তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। কেউ দোষী হলে দল রেয়াত করে না বলে জানিয়েছে তারা। আবার একইভাবে পার্থ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে দল যে তাঁকে ফিরিয়ে নেবে, সে আশ্বাসও শুনিয়ে রেখেছে। তবে পার্থর কি এবার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে? বিভিন্ন মহলে উঠছে সে প্রশ্নই। এদিনও জামিন পাননি পার্থ। ৭ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকতে হবে তাঁকে।