কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিন (Fake Vaccine Case) শিবির মামলায় ন’জনের বিরুদ্ধে জমা পড়ল দ্বিতীয় চার্জশিট। দেবাঞ্জন দেব (Debanjan Deb), ইন্দ্রজিৎ সাউ-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের চেষ্টার ধারা-সহ ১১টি ধরায় ৭৫০ পাতার চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। ৬৭ দিনের মধ্যে এই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার এই চার্জশিট জমা পড়ে আদালতে। এদিন আদালতে অভিযুক্তের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন,”চার্জশিটের প্রতিলিপি অভিযুক্তদের আইনজীবিদের দেওয়া হয়নি। সেই কারণে শুনানি করা যাবে না।” ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে সিটি কলেজেও টিকাকরণ শিবিরের আয়োজনের অভিযোগ ওঠে। এই মামলারই চার্জশিট জমা পড়ল এদিন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্দ্রজিৎ সাউয়ের মাধ্যমে দেবাঞ্জন সিটি কলেজে ভুয়ো প্রতিষেধক দিয়ে শিবির চালিয়েছিল। এই চার্জশিটে ৭৫ জন সাক্ষী রয়েছেন।
ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছিল কসবা থানার পুলিশ। কিন্তু ক্রমেই এই ঘটনার জাল এত দূর বিস্তার হতে শুরু করে, পরবর্তী কালে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখার হাতে সেই তদন্তভার যায়। দেবাঞ্জন দেব-সহ অনেককেই এই কাণ্ডে গ্রেফতারও করা হয়। এতদিন পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা যে তদন্ত চালিয়েছে, তাতে কী কী তথ্য উঠে এসেছে তার বিস্তারিত এদিন আদালতে জানানো হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় দেবাঞ্জন দেবের কী ভূমিকা ছিল, টিকার নামে যে ভুয়ো তরল দিনের পর দিন সাধারণ মানুষকে শিবির করে দেওয়া হয়েছে তাতে মূলত কী ছিল সমস্তটাই খতিয়ে দেখা হয় কলকাতা পুলিশের তরফে।
টিকার ভায়াল পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। সেই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট কী এসেছে তা আদালতের কাছে যেমন তুলে ধরা হয়েছে, পাশাপাশি অভিযুক্ত দেবাঞ্জনকে যারা যারা সহযোগিতা করেছে তারা কে কী ভাবে সহযোগিতা করেছিল, এই ঘটনা সম্পর্কে আগে থেকে কতটা অবহিত ছিল, কেন এই ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প খুলে সাধারণ মানুষকে ঠকানো হয়েছিল এ সংক্রান্ত যা যা তথ্য প্রমাণ এখনও অবধি তদন্তকারীদের হাতে এসেছে— সমস্ত উল্লেখ করেই চার্জশিট দাখিল হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত ২২ জুন কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবকে তড়িঘড়ি গ্রেফতারও করে পুলিশ। অভিযোগ ওঠে, অনুমতি ছাড়াই চলছিল করোনার টিকাকরণ। এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব গ্রেফতারের পর তদন্তে নিত্য নতুন তথ্য উঠে আসতে শুরু করে। তদন্তে গতি আনতে লালবাজারের তরফে সিটও গঠন করা হয়।
এর আগে গত মাসে ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে একটি চার্জশিট পেশ হয়। আলিপুর আদালতে এক হাজার পাতার এই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব-সহ মোট সাতজনের নাম ছিল সেখানে। খুনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্র, সম্মিলিত প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয় দেবাঞ্জন দেব-সহ বাকিদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: NCRB Report: উত্তর প্রদেশকে পিছনে ফেলে অ্যাসিড হামলায় শীর্ষে বাংলা!