কলকাতা: বজরং দলের মিছিলে, শৌর্য জাগরণ যাত্রার সব জেলার মিছিলের রুট ম্যাপ দিয়ে নতুন হলফনামা জমা দিতে হবে। মঙ্গলবারের শুনানিতে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ। বুধবার ফের ১২ টায় ফের শুনানি। আদৌ রানি রাসমনিতে মিছিল আসবে কি না, তা বুধবারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এদিন শুনানির সময়ে সওয়াল করেন, বজরংদল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ প্রতি বছর এমন মিছিল সমাবেশ করে। জলপাইগুড়ি থেকে যে মিছিল সভায় আসবে, তাদের ব্যাপারে সার্কিট বেঞ্চ অনুমতি দিয়েছে। প্রায় ২ হাজার লোকের জমায়েত হবে রানি রাসমণি মোড়ে। তবে গত শুক্রবার গোটা শহর স্তব্ধ হয়েছিল। জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক বন্ধ হয়েছিল। সেই বিষয়টিও উল্লেখ করা আদালতে। বিচারপতি তখন বলেন, “সেটা খুব খারাপ দিন গিয়েছে।” রাজ্য জানায়, ওই দিন মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না।
বিচারপতি জানতে চান,অনুমতি ছাড়া মিছিল করায় তাহলে প্রশাসনের তরফে কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে? রাজ্য উত্তরে জানায়, অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
রাজ্যের অভিযোগ, বজরং দলের সদস্যরা কোথাও ১০০, কোথাও ২০০, আবার কোথাও ২০ টা বাইক, রথ নিয়ে মিছিল করে আসবে।
রাজ্যের বক্তব্য, এখন পুজোর মরশুম। মানুষ বাজার করতে যায়। তাছাড়া বহু এলাকা আছে স্পর্শ কাতর। সেখান দিয়ে আসার সময় সমস্যা হতে পারে। বিচারপতি বলেন, “সার্কিট বেঞ্চ যে অনুমতি দিয়েছে সেটা কীভাবে পালন করবে রাজ্য?”
রাজ্যের বক্তব্য, “সেটা উত্তরবঙ্গের প্রশাসন ঠিক করবে। আর এটা কোনও রাজনৈতিক র্যালি নয়।” পাল্টা মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, “২১ জুলাই কী করে অনুমতি দেওয়া হয়?” রাজ্যের তরফ থেকে উত্তর দেওয়া হয়, “সরকার আর রাজনীতি আলাদা।”
বিচারপতি জানতে চান, “এটা শুধু রানি রাসমণি মোড়ের সভার বিষয় নয়। এত জেলা থেকে আসবে মিছিল। কোন দিক দিয়ে আসবে? কোথায় রাতে থাকবে? পুলিশ কী করবে?”
মামলাকারীর বক্তব্য, “১৬ বছর বয়েসে ক্ষুদিরাম বোসের জীবন দানের কথা লোকে জানে। কিন্তু ওড়িশার বালাজি রাওয়ের ১২ বছর বয়েসে জীবন দানের কথা বহু মানুষ জানে না। এমন স্বাধীনতা সংগ্রামী, ও বীর শহিদদের স্মরণে এই সমাবেশ। গোটা দেশে এমন সমাবেশ হচ্ছে।” তবে ঠিক কোন কোন দিক থেকে মিছিল এসে শহরের কোথায় মিশবে, তা নিয়ে বিস্তারিত রুট ম্যাপ জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার মিছিল করার কর্মসূচি নিয়েছে বজরং দল। কর্মসূচির নাম শৌর্য জাগরণ যাত্রা। ১ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর রাজ্যের একাধিক জেলায় এই রথ বের করছে হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠন। প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত হয়েছে চারটি রুটে সমান্তরালভাবে এই র্যালি এগোবে। মিছিলে জনজীবন বিধ্বস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করে মামলা দায়ের হয়।