কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করা কী আদৌ সম্ভব? গঙ্গাসাগর নিয়ে আজ হাইকোর্টকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে রাজ্য। গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছে, রাজ্য কী চায়? কোভিডের কথা মাথায় রেখে কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? এসবই রাজ্যের কাছ থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানতে চায় আদালত। হাইকোর্টের এও পর্যবেক্ষণ, সিদ্ধান্তের সময় প্রত্যেকের কথা মাথায় রেখেই পদক্ষেপ করতে হবে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় আদালতকে নিজের সিদ্ধান্ত জানাবে রাজ্য।
প্রসঙ্গত, কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন অভিনন্দন মণ্ডল নামে এক আইনজীবী। মামলাটি ওঠে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে।
মামলার শুরুতেই এ দিন পশ্চিমবঙ্গ চিকিৎসক ফোরামের পক্ষ থেকে মামলায় অংশ হওয়ার আবেদন জানানো হয়। মামলাকারী অভিনন্দন মণ্ডল দক্ষিণ দমদমের একটি সেফ হোমে চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জানান তাঁর অভিজ্ঞতা ভয়ঙ্কর। তাঁর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী জানান, কুম্ভের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হয় গঙ্গা সাগরে। ১৫ লক্ষ মানুষের জনসমাগম হওয়ার কথা। প্রধান বিচারপতি এ দিন প্রশ্ন করেন, কত মানুষ আসতে পারেন। এজি উত্তরে জানান, গত বছরে ৭ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয়েছিল। ওমিক্রনে ভয় নেই বলেই মেলা চলতে পারে কি?
মেলায় স্বাস্থ্যবিধি মানা কি আদৌ কোনওভাবে সম্ভব? কী কী পদক্ষেপ করছে রাজ্য? এই গোটা বিষয়টি রাজ্যের ওপরেই ছেড়েছে আদালত। আজই তা স্পষ্টভাবে আদালতে জানাবে রাজ্য।
প্রস্তুতি পরিদর্শন ২৯, ৩০ ডিসেম্বর গঙ্গাসাগরে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেরার সময় সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। গঙ্গাসাগরের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। প্রশ্ন করতেই বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আপনারা কেন গঙ্গাসাগর নিয়েই এত উৎসাহী? গঙ্গাসাগর নিয়ে তোমাদের ওত চিন্তা করতে হবে না। এটা আমাদের গঙ্গাসাগর নয়। পাবলিকের! পাবলিক যদি উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে আসতে চাইছেন, সেটা কি আমরা আটকাব? এটা কি ওদের আটকাতে পারি? এটা কি আমাদের হাতে আছে? তবে যাঁরা উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে আসবেন ভাবছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই ভালো বুঝেই আসবেন। কোভিড প্রটোকল মেনে আসবেন।”
ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের ভ্যাক্সিনেশন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কপিল মুনির আশ্রমের সামনে অস্থায়ী ভ্যাকসিন সেন্টার খোলা হয়েছে। তাতে টিকাকরণ চলছে। সাধুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, ১০ লক্ষ ভ্যাকসিন মজুত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাক্স পরা।
তবে ১৫ লক্ষের সমাগমে কোভিড রুখতে এই পদক্ষেপ কি আদৌ যথেষ্ট? গোটা বিষয়টিই এখন বিবেচ্য। গঙ্গাসাগর মেলার ভাগ্য নির্ধারণ আজ আদালতে।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: নেতাইয়ে ‘শহীদ স্মরণে’ শুভেন্দুর থাকায় কোনও বাধা নেই, জানাল হাইকোর্ট