
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হওয়ার পরেই নিয়েছিলেন হাতেখড়ি। বাংলা, বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ-ভালবাসা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমে বাংলার ভোটার হতে আগ্রহ দেখাননি প্রথম নাগরিক। এবার এনুমারেশন ফর্ম দেওয়ার একেবারে শেষ লগ্নে এই রাজ্যের ভোটার হতে চেয়ে আবেদন করলেন সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের কথায়, “এই বাংলার দত্তক সন্তান হতে চাই। রবীন্দ্রনাথ যে হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিয়েছিলেন। সেই বাংলায় আমি ভোটার হতে চাই। আমার পদবী বোস। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র ও বোস আমি মানসিক, সাংস্কৃতিক ভাবে বাংলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই।”
আজ এনুমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ দিন। রাজ্যের ভোটার হতে চেয়ে লোকভবনে বিএলও এবং সুপার ভাইজারদের কাছে আবেদনপত্র জমা দিলেন সিভি আনন্দ বোস।
বৃহস্পতিবার সকালে চৌরঙ্গী বিধানসভার ১৬২-র ৩৮ নম্বর পার্টের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিএলও গৌরাঙ্গ মালাকার রাজ্যপালের কাছে যান। রাজ্যপালের নাম রয়েছে এজি বেঙ্গল বুথে। এদিন বিএলও’র সঙ্গে যান অশোক তিওয়ারি এবং জয়ন্ত ঘোষ। তাঁরা দুজনেই সুপারভাইজার। গৌরাঙ্গ মালাকার বলেন, “রাজ্যপালকে এর আগে আমরা সমস্ত ফর্ম দিয়ে গিয়েছি। উনি নতুন ফর্ম ফিল আপ করবেন। সেই ফর্ম আমরা আজ গ্রহণ করতে এসেছি।”
সিভি আনন্দ বোস যখন বাংলার রাজ্যপাল হয়ে এসেছিলেন, তখনই তিনি স্পষ্ট করেছিলেন বাংলা ভাষাটাকে ঠিক কতটা ভালবাসেন। কতটা নেতাজির আদর্শ মেনে চলেন। বাংলা শিখতেই উদ্যোগী ছিলেন তিনি। সরস্বতী পুজোয় রাজভবনে ‘হাতেখড়ি’ও হয়েছিল তাঁর। জগদীপ ধনখড় পর্ব শেষ হতে বোসের জমনার একেবারের শুরুর দিকে রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল, অন্ততপক্ষে এই রাজ্যপালের পর্বে হয়তো রাজভবন-রাজ্য সদ্ভাব বজায় থাকবে।
পরবর্তীতে সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে। রাজনৈতিক মহলের কথায়, একাধিক ঘাত প্রতিঘাতে বর্তমানে সে সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। প্রথমে রাজভবন সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজ্যপাল আসলে কেরলের ভোটার। তাই তিনি নতুন করে আর বাংলার ভোটার হতে চান না। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি আবার আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল পদে থাকা ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ভোটার হওয়ার অধিকার থাকে। লোকভবনের তরফে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি গেলেই নাম ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়ে যায়। সাধারণ নাগরিকের মতো খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়াও নেই।