‘উনি দুর্নীতিগ্রস্ত লোক, জৈন হাওয়ালা কেসের চার্জশিটে নাম ছিল’, ধনখড়কে তীব্র আক্রমণ মমতার

Governor Jagdeep Dhankhar দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ, নবান্ন সাংবাদিক বৈঠকে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

'উনি দুর্নীতিগ্রস্ত লোক, জৈন হাওয়ালা কেসের চার্জশিটে নাম ছিল', ধনখড়কে তীব্র আক্রমণ মমতার
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 28, 2021 | 8:36 PM

কলকাতা: ‘ওনাকে নিয়ে সবার আগে তদন্ত করা উচিত।’ জৈন হাওয়ালা কেস তুলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) কে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপালকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “এই গভর্নরের নাম জৈন হাওয়ালা কেসেও ছিল। এখনও পিআইএল রয়েছে। এবং এখনও এর চূড়ান্ত শুনানি হয়নি। আর কী জানার আছে!”

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে নানা কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত ছিল নরসিমা রাওয়ের সরকার। আর তখনই হাওয়ালা কারবারের কথা প্রকাশ্যে আসে। তোলপাড় পড়ে যায় দেশে। অনেক নেতা ও মন্ত্রীর নাম জড়িয়ে যায় হাওয়ালা কারবারে। অন্তত ১১৫ জন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। নরসিমা রাও মন্ত্রিসভার তিন মন্ত্রীর নামও জড়িয়ে যায়। উঠে আসে জগদীপ ধনখড়ের নামও। সে সময় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন জনতা দলের সাংসদ। এই বিষয় তুলেই এদিন রাজ্যপালকে তুলোধোনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

তাঁর কথায়, “হি ইজ আ কোরাপ্টেড ম্যান (উনি একজন দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ)। এর পর কেন কেন্দ্র এমন একজনকে রাজ্যপাল করেছেন! চার্জশিট বের করে দেখুন, ওনার নাম ছিল কিনা। একটি মামলার এখনও ফয়সালা হয়নি।”

কলকাতায় ফেরার আগে জিটিএকে ‘দুর্নীতির আখড়া’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন রাজ্যপাল। সিএজি নিয়ে অডিট করানোর কথাও বলেছিলেন। তারই জবাবে বার তাঁকে তীব্রভাবে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি হাওয়ালা জৈন কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তীব্র আক্রমণ শানালেন। বললেন, “উনি নিজে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত। হাওয়ালা জৈন কাণ্ডের চার্জশিটে কার নাম উল্লেখ ছিল? তারপর কীভাবে পার পেয়েছেন? জিটিএ-র দুর্নীতির কথা বলার আগে উনি কাদের নিয়ে, কত খরচ করে দার্জিলিং গেলেন, রাজভবনে কত খরচ হল, সেসব নিয়ে তদন্ত হোক।” আর CAG দিয়ে জিটিএ-র অডিটের বিরোধিতায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্য সরকার নিজেই তার অডিট করছে, CAG অডিট প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন: ‘কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে’, GTA নিয়ে বিস্ফোরক রাজ্যপাল

এদিন এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “কখনও গভর্নর চলে যাচ্ছে এর বাড়ি ওর বাড়ি। বিজেপির সাজানো কেস। ডিজিস্টার রুল তো কাজ করবে। এই তো দেখলেন রাজ্যপাল ঘুরে এলেন, কী করতে গিয়েছিলেন? কতজনকে নিয়ে গিয়েছিলেন? উনি চলে আসার পর আজ আবার নতুন টিম গেছে। কাদের সঙ্গে মিট করেছেন? বিজেপির এমপি, বিজেপির এমএলএ, বিজেপির ব্লক সভাপতি। কেন তিনি হঠাৎ করে উত্তরবঙ্গ সফরটা বেছে নিলেন? উত্তরবঙ্গকে ভিন্নভিন্ন ছিন্নছিন্ন করার খেলায় মত্ত হতে? আমি এটাও জানি, আমাকে কেউ কেউ বলেছে, তাদের বলা হয়েছে, আন্দোলন গড়ে তোলো। এটা রাজ্যপালের কাজ নয়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “কতকগুলো ভূমিকা, কতকগুলো কর্তব্য় থাকা উচিত। আমি এরকম রাজ্যপাল আগে কখনও দেখিনি। যতদিন থাকবেন দেখা করব। এটা আমার কার্টেসি। তবে ওনাকে যাতে সরিয়ে নেওয়া হয় এর জন্য আমি তিনটে চিঠি লিখেছি। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের ভেবে দেখা উচিত।

আরও পড়ুন: বাস-অটো পরিষেবা চালু হচ্ছে রাজ্যে, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, আলোচনা হল না লোকাল ট্রেন নিয়ে

মমতা আরও যোগ করেন, “দার্জিলিঙের ওপর রাগটা কী? জিটিএ-এর ওপরও করে খাবে নাকি বিজেপি?” নবান্নে বৈঠকে কার্যত রণংদেহী ভাবে মমতা বলেন, “ওনার যা ইচ্ছে উনি তাই করবেন, যা ইচ্ছে তাই বলবেন, এটা আমি মেনে নেব না। ফোন করলে কথা বলব, দেখা করতে চাইলে দেখা করব। সেটা কার্টেসি। কিন্তু এরকম ডিক্টেট করা গভর্নর… প্রত্যেককে ডিক্টেট করে বলে দিচ্ছে এটা করতে হবে! একটা অফিসারকে বলে দিচ্ছে, ক্ল্যারিফাই করো। একটা অফিসারকে ফোন করে থ্রেট করছে। বলছেন, ইউ আর আন্ডার স্ক্যানার। হু ইজ হি? টকিং রাবিশ থিং!”