Jagdeep Dhankhar tweeted on Nadia Accident: মৃত্যুমিছিলে ‘গভীর শোকাহত’, মমতা-সরকারকে সড়ক-নিরাপত্তায় নজর দিতে ‘পরামর্শ’ ধনখড়ের

Nadia Road Accident: মৃত্যুর পর মৃতদেহ সৎকার করতে একটি গাড়ি প্রায় পঁয়ত্রিশ জনের যাত্রী নিয়ে নবদ্বীপ যাচ্ছিল। সেই সময় হাসখালি থানা ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাথর বোঝাই লরিতে সরাসরি ধাক্কা মারে শববাহী ওই গাড়িটি।

Jagdeep Dhankhar tweeted on Nadia Accident: মৃত্যুমিছিলে 'গভীর শোকাহত', মমতা-সরকারকে সড়ক-নিরাপত্তায় নজর দিতে 'পরামর্শ' ধনখড়ের
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 28, 2021 | 2:04 PM

কলকাতা: রাজ্যে মাঝেমধ্যেই উঠে এসেছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ছবি। কখনও সেই  দুর্ঘটনার নেপথ্যে গাড়ির চালক, কখনও বা অনিয়ন্ত্রিত গতি, কখনও বা রাস্তার বেহাল দশা। বিপদের কবলে পড়েছেন কেবল সাধারণ মানুষ। নভেম্বরের শেষ রবিবারের সকালে ফের সেই ছবিটাই যেন সত্যি হয়ে গেল আরও একবার। নবদ্বীপে সৎকারে যাওয়ার পথে গতির বলি প্রায় ১৮। জখম আরও জনা সতেরো শশ্মানযাত্রী। একে কুয়াশা তারপর অনিয়ন্ত্রিত গতি। সংঘর্ষের অভিঘাতেই মৃত্যু মিছিল। এমন মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। পাশাপাশি টুইটে মমতা-সরকারকে সড়ক-নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দিতে ‘পরামর্শও’ দিয়েছেন তিনি।

ধনখড় এদিন টুইটে লিখেছেন, “নদিয়ায় রাস্তার পাশে দাঁড়ানো একটি ট্রাকের সঙ্গে গাড়ির সংঘর্ষে ১৮ জনের মৃত্যু এবং ৫ জন আহত হওয়ার খবরে আমি গভীরভাবে শোকাহত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বলব, রাজ্য সরকার যেন সবরকমভাবে নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকে। রাজ্যে সড়ক-নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

নদিয়ার পথ দুর্ঘটনায় টুইট করে শোকবার্তা জ্ঞাপন করেছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় ঘটে যাওয়া পথ দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো মানুষদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। ঈশ্বর ওনাদের এই কঠিন পরিস্থিতিতে সহায় হোন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”

অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট বার্তায় লিখেছেন, “নদিয়ার সড়ক দুর্ঘটনায় আমি ব্যথিত। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই। যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। ঈশ্বর তাঁদের এই কঠিন সময় কাটিয়ে ওঠার শক্তি দিন, এই প্রার্থনা করি। সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে।”

সূত্রের খবর,মদন এলাকার বাসিন্দার শিবানী মুহুরী। তার মৃত্যুর পর মৃতদেহ সৎকার করতে একটি গাড়ি প্রায় পঁয়ত্রিশ জনের যাত্রী নিয়ে নবদ্বীপ যাচ্ছিল। সেই সময় হাসখালি থানা ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাথর বোঝাই লরিতে সরাসরি ধাক্কা মারে শববাহী ওই গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজনের। তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। সেখানেও মৃত্যু হয় কয়েকজনের বলে জানা যায়। একাধিক জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে অনুমান চিকিৎসকদের।

এক যাত্রী বলেন, “আমরা উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে নবদ্বীপ যাচ্ছিলাম শবদাহ করতে। রাস্তার পাশে একটি পাথর বোঝাই গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। সেই সময় সামনাসামনি ধাক্কা মেরে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তিরিশ জনের মধ্যে কুড়িজনের প্রাণ চলে গিয়েছে যতদূর জানি। বাকি দশজন বেঁচে রয়েছেন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক”

কাঁদো-কাঁদো অবস্থায় আরও এক যাত্রী বলেন, “রাস্তায় কুয়াশা ছিল। খানাখন্দ ভরা ছিল। হয় ড্রাইভার ঘুমিয়ে পড়েছিল নয়ত দেখতে পায়নি। এত জোরে গাড়ি চালাচ্ছিল। নবদ্বীপের সামনে এসে পাশের একটি পাথর বোঝাই লরিতে ধাক্কা মারে। প্রায় জনা সতেরো-আঠারো মানুষ মারা গিয়েছেন। যার শব নিয়ে ওই গাড়িটি রওনা দিয়েছিলেন তার পরিবারের মোট পাঁচজন মারা গিয়েছে। ওদের সঙ্গে পাঁচ বছরের একটি মেয়েও ছিল। সেও আর রইল না। কয়েকদিন আগেই আমার আত্মীয় বাড়ি ফিরেছিল। সে সিআরপিএফ জওয়ান। ওই গাড়িতে সেও ছিল। এখন আর বেঁচে নেই।”

দুই ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর এক বৃদ্ধ। দিগ-বিদিগ জ্ঞানশূন্য অবস্থা হয়ে গিয়েছে তাঁর। ঠিকভাবে বলতে পারলেন কী হয়েছে। শুধু কাঁদো-কাঁদো গলায় বললেন, “আমার দুই ছেলে। দু’জনেই মারা গিয়েছে।”

রাস্তায় ভরা খানাখন্দ। দোসর অনিয়ন্ত্রিত গতি। এত মানুষের মৃত্যুর দায় কে নেবে? চালকের কি আরও একটু সাবধান হওয়া প্রয়োজন ছিল না? তাহলে কি দুর্ঘটনা এড়ানো যেত না? এমনই নানা প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের তরফে মৃতের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতে পারে। তবে, এখনও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেনি রাজ্য সরকার।

আরও পড়ুন: BJP MLA: ‘নিখোঁজ’ পদ্ম বিধায়ককে খুঁজতে পুলিশের দ্বারস্থ যুব তৃণমূল!