
কলকাতা: জেলাগুলি থেকে মাঝে-মধ্যে প্রকাশ্যে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর। কিন্তু এবার কলকাতা হাইকোর্টের ক্লাবের ভোটে এখন তৃণমূল ভার্সেস তৃণমূল। শাসকদলের সরকারি প্যানেলকে পাত্তা না দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ক্লাবের ভোটে পৃথক প্রার্থী তালিকা তৃণমূলেরই আর এক গোষ্ঠীর।
আগামী ২৫ নভেম্বর ভোট রয়েছে। সেই কারণে সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। সেই দিন একেবারে শেষ মুহূর্তে সরকারি প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক আবেদন ফিরিয়ে নেন। তার মাত্র দশ মিনিট আগে ওই একই পদের লড়াইয়ে সামিল সঞ্জীব দাঁ তিনিও আবেদন তুলে নেন। ফলে সরকারি প্যানেলের বাকি পদগুলিতে প্রার্থীরা থাকলেও কার্যত তা ‘মুণ্ডহীন’ দেহের চেহারা নিয়েছে। আর এই আবহেই শাসক দলের পৃথক প্যানেল আলোচনার বিষয় বস্তু হয়ে উঠেছে। এর বাইরে বিজেপি ও কংগ্রেস প্রভাবিত প্রার্থীরা ভোটে যোগ দান করলেও খবরের শিরোনামে তৃণমূলের দুই প্যানেল।
কয়েক মাস আগে তৃণমূলের ‘রাজ্য লিগ্যাল সেলের’ চেয়ারম্যান পদ থেকে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে সরিয়ে সেখানে বসানো হয় রাজ্যের আর এক মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে। তারপরেই কলকাতা হাইকোর্ট তৃণমূল লিগ্যাল সেলের নতুন কমিটি গঠিত হয়। আহ্বায়ক হিসেবে মলয় ঘটক ঘনিষ্ঠ তরুণ চট্টোপাধ্যায় বদলে আনা হয় অনিত দাসকে। আরও বেশ কিছু বদল হয় আইনজীবী প্যানেল ও সংগঠনে।
এরইমধ্যে হাইকোর্ট ক্লাবের ভোটের জন্য তৃণমূল লিগ্যাল সেলের তরফে আইনজীবীদের নামের তালিকা দেওয়া হয়। তাঁরা মনোনয়ন জমা দেন। তার মধ্যে আর একদল আইনজীবী মনোনয়ন জমা দেন। যাঁদের বেশিরভাগই রাজ্য সরকারের প্যানেলভুক্ত আইনজীবী। লিগ্যাল সেলের প্রাক্তন আহ্বায়ক তরুণ চট্টোপাধ্যায় ওই তালিকা দিয়েছেন বলে খবর। আবার তৃণমূলের অফিসিয়াল প্যানেলের প্রচারের সময় তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ কুৎসা রটাচ্ছে বলে অভিযোগ করে দলকে হোয়াটস অ্যাপ করেন। তারপর শেষ মুহূর্তে বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক বিশ্বব্রত এই তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করেন।
সূত্রের খবর বিশ্বব্রত কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের ছিলেন। অন্যদিকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সঞ্জীব দাঁকে ওই পদে দাঁড়ানোর কথা জানান। পরে দু’জনেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। বর্তমানে ওই পদে লড়াইয়ে নাম রয়েছে তৃণমূলের কমলেশ ঝাঁয়ের। তিনি আবার বিজেপির ব্রজেশ ঝাঁয়ের ভাই। ফলে শাসক দলের হাইকোর্টে অফিসিয়াল তালিকার বাকি প্রার্থীদের থেকে আদপে কে জিতবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরে।