রোমা ঝাওয়ার অপহরণকাণ্ড: ১৬ বছর পর সাজা ঘোষণা! গুঞ্জন ঘোষের যাবজ্জীবন, তিন সঙ্গীরও
Roma Jhawar Abduction Case: সল্টলেকের ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে রোমা ঝাওয়ার। ২০০৫ সালে যখন এই ঘটনা, তখন রোমা কলেজ ছাত্রী।
কলকাতা: রোমা ঝাওয়ার অপহরণ (Roma Jhawar Abduction Case) ও মুক্তিপণের বাটোয়ারা নিয়ে গোলমাল। তার জেরেই এক সঙ্গীকে খুন করেছিল গুঞ্জন ঘোষ-সহ চারজন। গত বৃহস্পতিবার চারজনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে আলিপুর আদালত। সোমবার শোনানো হল সাজা। ১৬ বছর আগের এই খুনের মামলায় গুঞ্জন ঘোষ-সহ বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত।
গুঞ্জন ঘোষ ছাড়াও এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন গুড্ডু যাদব, মুন্না সিং, মুকেশ সিং নামে আরও তিনজন। প্রত্যেকেই গুঞ্জনের সঙ্গী ছিল ওই খুনের ঘটনায়। ৩০২ ধারায় চারজনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
১৬ বছর পর খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হল অভিযুক্তরা। সল্টলেকের ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে রোমা ঝাওয়ার। ২০০৫ সালে তখন রোমা কলেজ ছাত্রী। গুঞ্জন ঘোষ ও তার দলবল অপহরণ করে রোমা ঝাওয়ারকে। মুক্তিপণ বাবদ আদায় হয় ২০ লক্ষ টাকা। সেই মুক্তিপণের ভাগ নিয়ে গন্ডগোলের জেরে গুঞ্জন তার সঙ্গী অরবিন্দ প্রসাদকে গুলি করে খুন করে। গুঞ্জন ও তার তিন সঙ্গী মুন্না সিং, মুকেশ সিং ও গুড্ডু যাদবকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দীর্ঘদিন ধরে সেই মামলার শুনানি পর্ব চলে। অবশেষে গত সপ্তাহে অরবিন্দ প্রসাদ খুনের ঘটনায় সাজা শোনায় আলিপুর জাজেস কোর্ট। চারজনই দোষী সাব্যস্ত হয়। রোমা ঝাওয়ার অপহরণকাণ্ড ছাড়াও দমদমের এক ব্যবসায়ীর ছেলে মিঠুন কোলে এবং বিশ্বজিত্ দে নামে দু’জনের খুনের ঘটনাতেও দোষী সাব্যস্ত হন গুঞ্জন ঘোষ। যদিও এই ঘটনায় গুঞ্জনের আরেক সঙ্গী পাপ্পু এখনও ফেরার।
ঠিক কী হয়েছিল ১৬ বছর আগে?
২০০৫ সালে রোমা ঝাওয়ার নামে এক তরুণীকে অপহরণ করা হয়েছিল। রাস্তা থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। রোমাকে মুক্ত করার জন্য ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। সেই টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার কথা ছিল অপহরণকারীদের। টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বচসার জেরেই দলেরই সদস্য অরবিন্দ প্রসাদকে খুন করা হয়।
পরে গুঞ্জন ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, গুঞ্জন একা নয়, তার আরও কয়েকজন শাগরেদ রয়েছে। চারজন মিলে এই খুনের ঘটনা ঘটায়। শুধু তাই নয় প্রমাণ লোপাট করার জন্য দেহ ফেলে দেয় তিলজলা এলাকার একটি ঝিলের ধারে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে দুর্ঘটনা বলে চালানো হলেও অপহরণের ঘটনায় গুঞ্জন গ্রেফতার হওয়ার পর সামনে আসে খুনের তত্ত্ব। এই ঘটনায় এফআইআর হয়েছিল তৎকালীন রাজ্য পুলিশের অধীনে থাকা তিলজলা থানায়।
আইপিএস রাজীব কুমার নিজে তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে ক’টি অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেগুলি সবই প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিচারক। সবাইকে গ্রেফাতার করা গেলেও পাপ্পু নামে আর এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি এখনও।
আরও পড়ুন: Bhabanipur By-Election: ভবানীপুরের ভোট নিয়ে রাজ্যের স্বস্তি, পিছল জনস্বার্থ মামলার শুনানি