
কলকাতা: কবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল প্রকাশ? স্পষ্ট করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ। তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন, রাজ্যকে ১৫ দিনের মধ্যে নতুন করে মেধা তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ। নতুন করে প্যানেল করতে হবে। আগের নিয়ম অনুযায়ী ৬৬টি সম্প্রদায় ও ৭ শতাংশ সংরক্ষণ, তা মেনেই নতুন করে মেধাতালিকা তৈরি করতে হবে রাজ্যকে।
প্রসঙ্গত, ঘোষণা করেও হাইকোর্টের নির্দেশে WBJEE-র পরীক্ষার ফলপ্রকাশ করতে পারল না বোর্ড। বিচারপতি কৌশিক চন্দ স্পষ্ট জানিয়েছেন, মেধাতালিকা ওবিসি এ ও ওবিসি বি অনুযায়ী যেভাবে তৈরি হয়েছে, সেটা অনুযায়ী ফল প্রকাশ করা যাবে না। ২২ মে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী ওবিসি তালিকা (অর্থাৎ সেখানে থাকবে ৬৬ সংরক্ষণ) মেনে মেধা তালিকা তৈরি করে ফলপ্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে মামলা হওয়ার আগে ৭ শতাংশই সংরক্ষণ ছিল। কিন্তু এখন রাজ্য সরকারের তরফে সেটা ১৭ শতাংশ ওবিসি সংরক্ষণ করতে চাইছে। তাতেই আপত্তি বিচারপতির।
এদিনের শুনানির শুরুতে বিচারপতি বলেন, “শীর্ষ আদালত একটি নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানতে চায় রাজ্য কী করছে? শীর্ষ আদালতের রায়ের প্রভাব কী পড়বে?” এদিন জয়েন্ট এন্ট্রাস বোর্ডের তরফে হাইকোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমরা আজই জয়েন্টের ফলপ্রকাশ করব। ২০২৫-এর ভর্তি পরে হোক, তাতে কোনও অসুবিধা নেই।” তিনি এটাও উল্লেখ করেন, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ আছে এক্ষেত্রে।
বিচারপতি তখন তাঁর কাছে জানতে চান, “সেক্ষেত্রে ওবিসি এ ও ওবিসি বি কীভাবে যুক্ত হবে?” উত্তরে কল্যাণ বলেন, “হ্যাঁ হবে। যাঁদের সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছিল, তাঁরা পোর্টালে আবেদন করবেন। ফিনান্সিয়াল স্ট্যাটাস জমা দিতে হবে।”
তখন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “পেন্ডিং অ্যাডমিশনের ক্ষেত্রে কীভাবে এই নোটিফিকেশন কাজে লাগাতে পারেন?” তিনি তখন স্পষ্টই বলে দেন, “দুই ক্যাটেগরি যুক্ত করলে রেজাল্ট প্রকাশ করতে দেব না। কারণ শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেননি। পুরনো ভর্তির ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ সংরক্ষণ মানতে হবে।”
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, যখন এই মামলাগুলো হয়েছিল, তখন শীর্ষ আদালতের রায়ের সঙ্গে এটি সম্পর্কিত ছিল না, সেক্ষেত্রে ৬৬ টি সম্প্রদায়কে মেনেই ৭ শতাংশ সংরক্ষণ নীতি কার্যকরী করতে হবে।
বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের পর মাত্র কয়েক দিনে কীভাবে সকলকে ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া সম্ভব হল? আদৌ তা সঠিকভাবে যাচাই হয়েছে?
গত বছর এপ্রিল মাসে ২০১০ সালের পরের সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দিয়েছিল হাই কোর্ট। ২০১০-এর আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ৬৬টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি বলে ধরা হত। জয়েন্ট এন্টান্স বোর্ডের মামলায় এর আগে বিচারপতি চন্দর পর্যবেক্ষণ ছিল, ২০১০ সালের আগের ওবিসি তালিকা মেনেই ফলপ্রকাশ করা যাবে। গত ২৮ জুলাই ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তাতেই বিচারপতি চন্দের বক্তব্য, হাই কোর্টের ২০২৪ সালের ওবিসি রায় লঙ্ঘন করা হয়েছে। যে সময় হাই কোর্টের নির্দেশের উপর সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়নি, তখন কেন হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি? অর্থাৎ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। তবে এদিনের রায়ে আপাতত কোন অবমাননা মামলায় পদক্ষেপ করা হল না।