
কলকাতা: রোজভ্যালি মামলায় এবার উঠল নতুন প্রশ্ন। আদালতের নির্দেশে তৈরি হওয়া কমিটির বিরুদ্ধেই উঠল অভিযোগ। আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য যে কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, সেই কমিটি নিয়েই অভিযোগ উঠেছে। ইডি-র হাত থেকে সব নথি নিয়ে সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য এডিসি কমিটি গঠন হয়েছিল ২০১৫ সালে।
যাবতীয় নথি দেখে হতাশ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ ও বিচারপতি ঋতব্রত মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের মৌখিক নির্দেশ, চলতি সপ্তাহেই ইডি রোজভ্যালির যাবতীয় নথি সিবিআই-এর হাতে তুলে দেবে। সিবিআই-এর আইনজীবীকে আদালতের নির্দেশ, আগামী শুক্রবার সিবিআই জানাবে রোজভ্যালির মূল মামলার তদন্ত কতটা এগিয়েছে। তারপরের ১৫ দিনের মধ্যে এই আর্থিক তছরুপের অভিযোগের তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে হাইকোর্টকে।
শুক্রবার শুনানিতে বিচারপতি ভরদ্বাজ বলেন, “রোজভ্যালির টাকা তোলার জন্য ৩১ লক্ষ আবেদন জমা পরেছে। অন্তত এক কোটি লোকের থেকে টাকা তোলা হয়েছে।” আপাতত ৭৪ হাজার লোককে টাকা মেটানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি। ৫৩১ কোটি টাকা হাতে আছে। তারপরও টাকা মেটানো হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি।
বিচারপতি ভরদ্বাজ বলেন, “তাহলে আর কবে টাকা মেটানো হবে? কতদিন লাগবে টাকা ফেরাতে? অন্তত ৩০ শতাংশ লোকের টাকা মেটানোর ব্যবস্থা করুন। এর বাইরে যাবতীয় যা সম্পত্তি হাতে আছে, সেগুলো বিক্রি করেননি। উল্টে দুটো লোককে যুক্ত করে হোটেল ব্যবসা চালাচ্ছে। ইডি এই সুযোগ করে দিয়েছে।”
বিচারপতি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, যে দু’জন কোনওদিন রোজভ্যালির কোনও শাখা সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন না, তাঁরা কীভাবে ব্যবসায় যুক্ত হলেন? এডিসি বলছে, ইডি ওই দু’জনকে যুক্ত করতে বলেছে। কোর্টের প্রশ্ন, ইডি-কে কে এক্তিয়ার দিল এমন দু’জনকে যুক্ত করতে? কোন আইন, কোন কোর্টের অর্ডারে এটা করা হল? ইডি বলে ‘আমরা শুধু টাকা মেটানোর বিষয়টা নিশ্চিত করতে চেয়েছি। আর কিছু না।’ বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘এই দুজনকে কীভাবে নিয়োগ করার অনুমতি দেয়? ইডি বা কমিটি?’ ইডি-র বক্তব্য, ফান্ড নিশ্চিত করতে চেয়েছিল তারা। বারণ করেনি।
বিচারপতি আবারও প্রশ্ন করেন, কোন এক্তিয়ারে ইডি এটা করল? কোন আইনে? এডিসি-কে কোর্ট বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ফেরাতে বলেছিল। ইডি জানায়, সেবি সেই সব সম্পত্তি বিক্রির দায়িত্বে ছিল। হাইকোর্ট যে লক্ষ্যে কমিটি গড়েছিল, বাস্তবে সেটা হয়েছে কি না, প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এডিসি কমিটি চকোলেট গ্রুপ নামে সংস্থাকে কী করে হোটেল চালাতে দিল, সিবিআই-কে তার তদন্ত করতে বলল ডিভিশন বেঞ্চ। ইডি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, রোজভ্যালি ১৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলেছে।