তন্ময় প্রামাণিক: করোনা (COVID-19) আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে মৃত্যু। সময়ের ব্যবধান মাত্র ৩৬ ঘণ্টা ১৪ মিনিট। অথচ হাসপাতাল থেকে দেহ বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় মৃতের পরিবারের হাতে ধরানো হল প্রায় ১২ লক্ষ টাকার বিল। ঢাকুরিয়া আমরির বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ মৃতের পরিবারের।
আমরি হাসপাতালে গত ১৪ মে দুপুর ২টো ৪ নাগাদ ভর্তি হন ৫৭ বছর বয়সী অসীম দত্ত। ১৬ তারিখ রাত ২টো ৩০-এ মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের আত্মীয় অসিত দাস বলেন, “করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হওয়ার পর অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রেখেছিলাম ওনাকে। পরে অবস্থার গুরুতর অবনতি হওয়ায় ওই হাসপাতাল বলে একমো সাপোর্ট লাগবে। আমরা ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে যোগাযোগ করি।”
অসিত দাসের দাবি, “আমরি থেকে বলা হয়েছিল ওদের একটা একমো রয়েছে। তা দেওয়া যাবে। কিন্তু খরচ অনেক। ওরা আমাদের একটা এস্টিমেট দিয়েছিল। ২১ দিনের জন্য ৪১ লক্ষ টাকা। আমরা তিন লক্ষ টাকা অগ্রিমও দিই। কিন্তু ৩৬ ঘণ্টার মাথায় আমাদের আত্মীয় মারা গিয়েছেন। ভেবেছিলাম কিছু টাকা আমরা ফেরত পাব। হাসপাতালের তরফে আমাদের বলা হয়েছিল একমো সাপোর্ট থাকলে দিনে ১ লক্ষ টাকার একটু বেশি খরচ হয়। অথচ ডেথ সার্টিফিকেট আনতে গিয়ে আমাদের মাথায় হাত। বিলের অঙ্ক ১১ লক্ষ ৯৩ হাজার ৮৬০ টাকা। কেন এত খরচ বুঝতে পারছি না। বিল সঠিক না বেঠিক তাও জানি না। এত বিল হলে সাধারণ মানুষ তো চিকিৎসাই করাতে পারবেন না।”
আরও পড়ুন: বেতনের অর্থে করোনা আক্রান্তদের জন্য ওষুধ-খাবার নিয়ে দুয়ারে শিক্ষক
যদিও এ প্রসঙ্গে আমরি হাসপাতালের সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, “একমো সাপোর্ট দিলে প্রথমেই মেশিন ইনস্টলেশন করতে খরচ হয়ে যায় প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। তারপর রয়েছে আরও বিভিন্ন খরচ। শুরুতে কয়েকদিন খরচটা অনেক বেশি থাকে। পরে ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এটা মানুষের জানা দরকার। আধুনিক বিজ্ঞান বলছে একেবারে শেষ মুহূর্তে করোনা আক্রান্তদের বাঁচানোর জন্য শেষ চেষ্টা হচ্ছে একমো সাপোর্ট। সেটা ব্যয়বহুল। তবু আমরা পুরো বিলটি ফের খতিয়ে দেখব।”
দত্ত পরিবার অবশ্য বুঝতে পারছে না এই খতিয়ে দেখার আশ্বাসে তারা আদৌ উপকৃত হবে কি না। নবজীবন কলোনির এই পরিবারে মৃত্যু শোকের সঙ্গে ভাবাচ্ছে হাসপাতালের এই বিপুল বিলও।