ফাইল ছবি
Image Credit source: TV9 Bangla
কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে একগুচ্ছ মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। ভোট থেকে গণনা, সব ক্ষেত্রেই অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। এবার ভোট-হিংসার মামলায় রাজ্য় নির্বাচন কমিশনকে কড়া বার্তা দিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। কেন এখনও হিংসা চলছে? কেন মানুষ মার খাচ্ছে? প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতি। ভোটে যাঁরা জয়ী হয়েছেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ, মামলার ভবিষ্যতের ওপর নির্ভর করলে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
হাইকোর্টে পঞ্চায়েত মামলার শুনানিতে কে কী বললেন, একনজরে
- কমিশনকে আদালত জানিয়েছে, জয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে মামলার ভবিষ্যতের উপর। নির্বাচন ও গণনার ভবিষ্যতও ঠিক হবে মামলার উপর ভিত্তি করেই। কমিশনকে সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম বলেন, ‘রাজ্য সরকার ফলাফলের পরেও অশান্তি সামলাতে পারেনি। এই ঘটনায় আদালত অবাক হয়েছে। রাজ্য যদি নিজের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে না পারে, তাহলে সেটা সিরিয়াস নোট নেওয়া হবে।’ কমিশনকে এ বিষয়ে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
- বুধবার আদালতে ছিলেন না, কমিশনের কোনও অফিসার। তাই কমিশনের উত্তর যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন প্রধান বিচারপতি। হাইকোর্টের নির্দেশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে অসহযোগিতার যে অভিযোগ উঠেছে, তা আদালত বিশেষভাবে দেখবে। কমিশনকে পুনর্নিবাচন নিয়ে আবার বিবেচনা করতে হবে। যে বুথগুলির কথা মামলায় এসেছে সেগুলি দেখতে হবে। যে ঘটনা ঘটেছে তার দায়িত্ব কমিশনকে নিতে হবে বলেই মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।
- এমন নির্বাচনের কী দরকার, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রিয়াঙ্কা টিব্রেরেওয়াল। তিনি বলেন, আমাদের ভোট দিতে হবে না। মানুষের প্রাণ বাঁচুক। তাঁর আরও অভিযোগ, হামলার ঘটনায় পুলিশ সাহায্য করেছে, গণনা কেন্দ্রের ভিতরে তৃণমূলের লোকজন ছাড়া আর কেউ ছিল না। অভিযোগ জানাতে গেলে হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠি ফোন ধরেননি বলেও দাবি প্রিয়াঙ্কার।
- মামলাকারী শমিক বাগচি পুনর্নিবাচনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, অশান্তি চলছে একাধিক জায়গায়, বোমাবাজিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্কুলগুলি। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
- নির্বাচন কমিশনার বলেছে কে কোথায় গুলি করবে তার দায়িত্ব নেওয়া যায় না। এটা নির্বাচন কমিশনারের মনোভাব হতে পারে? প্রশ্ন তুলেছেন প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। তাঁর অভিযোগ, ব্যালট বক্স নিয়ে কার্যত ফুটবল খেলা হয়েছে।
- রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী করছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারীর আইনজীবী। তাঁর প্রশ্ন, কেন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আইনজীবী উল্লেখ করেছেন, ডায়মন্ড হারবারে দুষ্কৃতীরা প্রিসাইডিং অফিসারকে বন্দুক দেখিয়ে বুথ দখল করেছে, খুনের ঘটনা ঘটেছে কোচবিহারে। নির্বাচন কমিশনের ভোট বাতিল করা উচিত বলে মন্তব্য করে আইনজীবী বলেন, অন্তত ৬ হাজার বুথে পুনর্নির্বাচন করা জরুরি।
- বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী উল্লেখ করেন, ৮ জুলাই অর্থাৎ ভোট ঘোষণার সময় থেকেই সমস্যা চলছে। ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে উল্লেখ করেছে তিনি। আইনজীবী জানিয়েছেন, শুধু হিংসার ঘটনাই নয়, ব্যালট নষ্ট করার ঘটনা ঘটেছে, এমন অনেক ছবি আছে।
- শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম প্রশ্ন করেন, ‘এখনও কেন হিংসা চলছে? কেন মানুষ মার খাচ্ছেন? জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ, কেন হচ্ছে এসব?’
- গণনা ঘিরে প্রবল অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। তিন জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। রাতভর বোমাবাজি চলেছে ভাঙড়ে। এই পরিস্থিতিতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। বুধবার পঞ্চায়েত সংক্রান্ত মূল মামলার সঙ্গেই ছিল শুনানি।