
কলকাতা: ‘আমরা স্কুলে যেতে পারছি না। তিন মাস ধরে বেতন বন্ধ। এবার ভাতাও পাব না।’, আদালতের রায়কে আপাতত ‘ভাগ্যের পরিহাস’ বলেই দাগিয়ে দিলেন এক চাকরিহারা শিক্ষাকর্মী। তাঁর দাবি, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। এত দিন ধরে কাজ করেছি। কিন্তু আজ অন্যের দোষে আমাদের ভুগতে হচ্ছে।’
শুক্রবার চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাকরিহারাদের কোনও ভাবেই ভাতা দিতে পারবে না রাজ্য।
আদালতের এই রায়ের পরেই আবার যেন অনিশ্চয়তার পাহাড় ভেঙে পড়েছে চাকরিহারাদের মাথার উপর। এদিন এক চাকরিহারা শিক্ষা কর্মী বলেন, ‘চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্য়েও যেমন যোগ্য-অযোগ্য রয়েছে। ঠিক তেমনই শিক্ষা কর্মীদের মধ্যেও যোগ্য-অযোগ্য রয়েছে। আমরা প্রথম থেকে দাবি জানিয়ে এসেছি যোগ্যদের হয়ে। কতজন অযোগ্য রয়েছে তাও জানিয়েছি। কিন্তু তারপরেও আজ এই পরিণতি।’
যোগ্য-অযোগ্য মেলানোর কারণেই কি ভাতায় পড়ল কাঁটা? সেই দিকেই আপাতত ইঙ্গিত দিচ্ছেন একাংশের চাকরিহারারা। তাদের দাবি, ‘আমরা দাবি জানিয়েছিলাম শুধুমাত্র যোগ্যদের ভাতা দেওয়ার জন্য। কিন্তু রাজ্য সরকার আবার যোগ্য-অযোগ্য মিলিয়ে দিল। এটা হয়তো তারই পরিণতি।’ আরও এক চাকরিহারার আবার বলেন, ‘এই রকম রায় আসবে আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম।’
এদিনের রায় প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষের দাবি, ‘আদালতের এই রায় রাজ্য সরকারের গালে আরও একটি চপেটাঘাত বলেই আমি মনে করি। তবে এখানে চাকরিহারাদের প্রতি সহানুভূতিরও জায়গা রয়েছে।’ আদালতের এই রায় নিয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূল শিবিরও। বিজেপি ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবি, ‘একটা নির্বাচিত সরকার যাতে কোনও ভাবে কাজ না করতে পারে এখন সেই উদ্দেশ্য সাধনেই ময়দানে নেমেছে বিচার ব্যবস্থা। আমরা এর আগেও দেখেছি, হাইকোর্টের কয়েকটি বেঞ্চ, রাজ্য সব কাজকে আটকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও সরকারের বিরুদ্ধে যে সব রায় দিয়েছিলেন, তা কোন উদ্দেশ্য সাধনে করেছিলেন সেটা এখন পরিষ্কার।’