Rani Birla Girls College: গভর্নিং বডির ভোট বিজ্ঞপ্তি ঘিরে তুমুল ঝামেলা! নেতার ‘হুমকি’-র চোটে হাসপাতালে অধ্যক্ষ

Rani Birla Girls College: এই মুহূর্তে পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধ্যক্ষা। অধ্যক্ষা শিবিরের বক্তব্য, রানি বিড়লা গার্লস কলেজের হিন্দির অধ্যাপক মন্টু দাসকে পরিচালন সমিতির সদস্য করা নিয়েই গণ্ডগোলের সূত্রপাত।

Rani Birla Girls College: গভর্নিং বডির ভোট বিজ্ঞপ্তি ঘিরে তুমুল ঝামেলা! নেতার হুমকি-র চোটে হাসপাতালে অধ্যক্ষ
বামদিকে অধ্যক্ষ শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য, ডান দিকে অধ্যাপক মানস কবি Image Credit source: TV 9 Bangla

| Edited By: জয়দীপ দাস

Jun 24, 2025 | 1:26 PM

কলকাতা: অধ্যক্ষ সংগঠনের নেতার ‘হুমকি’-র চোটে হাসপাতালে অধ্যক্ষ! তা ঘিরেই তুমুল ঝামেলা রানি বিড়লা গার্লস কলেজে। পরিচালন সমিতির ভোট ঘিরে চরম নৈরাজ্য ক্যাম্পাসে। গভর্নিং বডির ভোট বিজ্ঞপ্তি জারি নিয়ে বুধবার কলেজে তুমুল ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। ভোট বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারে অধ্যক্ষা শ্রাবন্তী ভট্টাচার্যের উপরে ‘মানসিক চাপ’ তৈরির অভিযোগ তৃণমূল প্রভাবিত কলেজ অধ্যক্ষদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানস কবি-র বিরুদ্ধে।

অধ্যক্ষ শ্রাবন্তী ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠদের দাবি, ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পর মানস কবি তাঁর ঘনিষ্ঠ অন্য কলেজের কয়েকজন অধ্যক্ষকে সঙ্গে নিয়ে রানি বিড়লা কলেজে বুধবার আসেন। ভোট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি জানানোর পাশাপাশি এমন কিছু কথা বলা হয় যার জেরে শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই মুহূর্তে পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ শিবিরের আরও বক্তব্য, রানি বিড়লা গার্লস কলেজের হিন্দির অধ্যাপক মন্টু দাসকে পরিচালন সমিতির সদস্য করা নিয়েই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। শ্রাবন্তী ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মানস কবি ঠিক কী বলেছেন সে বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলবেন না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে যা জানানোর তিনি জানিয়েছেন। তবে বুধবারের এই ঘটনাক্রমই তাঁর অসুস্থতার কারণ। গন্ডোগোলেন মূলে মন্টু দাসের পরিচালন সমিতিতে অন্তর্ভূক্তি প্রসঙ্গে শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য বলেন, “ওনাকে ঢোকানোর জন্য সরাসরি না হলেও আমাকে একটা চাপ দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। গত কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে চাপ তৈরি করা হয়েছিল। গতকাল খুবই উত্তেজিত করা হয়েছিল। তারপরই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়।” 

অধ্যক্ষ শিবির জানিয়েছে, মন্টু দাসের বিরুদ্ধে ভুয়ো এসসি সার্টিফিকেট দাখিল করে চাকরি হাতানোর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের নিষ্পত্তি হ‌ওয়ার আগেই মন্টু দাসকে জিবি’র সদস্য করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। আর সেই কারণেই পরিচালন সমিতির ইলেকশন না করে সিলেকশনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তাতে রাজি না হয়ে অধ্যক্ষা বুধবার পরিচালন সমিতির ভোট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর‌ই বুধবার কলেজের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে অধ্যক্ষকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।  

ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলেজের অধ্যাপিকা শর্মিলা পাল। তিনি বলছেন, “আগেও প্রিন্সিপাল ম্য়াডামকে এই ধরনের চাপ দেওয়া হয়েছিল। কাল পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। তবে বন্ধ ঘরের ভিতর কী কথা হয়েছে আমরা শুনতে পাইনি। কিন্তু খুবই চিৎকার-চেঁচামেঁচি হয়েছিল। তারপরই উনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু, আমরা সবাই চাই ইলেকশনটা হোক।”  

অন্যদিকে তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য অধ্যক্ষ পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক মানস কবি-র শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য মিথ্যা অভিযোগ করছেন। তাঁরা এমন কিছুই ঘটনানি যার জন্য তাঁকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। তিনি বলছেন, উনি তো খুব হাসিমুখে ফুল মিষ্টি যোগে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আসলে উনি দীর্ঘদিন ধরে অনেক কিছুই বলে যাচ্ছেন। ওনার বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ আছে। অধ্যক্ষ এই কলেজে জিবি চান না। ৬ মাসের বেশি কোনও জিবি থাকতে দেন না। আসলে উনি অভিনয় করছেন। উনিই তো  টিচারদের হুমকি দিয়েছেন। মন্টু দাসের সার্টিফিকেট কী হয়েছে সেটা মন্টু দাস বুঝবেন। তার দায় আমার নয়। এ ঘটনায় আমরা অত্যন্ত হতাশ। এটা সমাজের লজ্জা।” অন্যদিকে মন্টু দাসের প্রতিক্রিয়া নিতে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এরইমধ্য়ে রানি বিড়লা গার্লস কলেজের এই অধ্যাপকের ভুয়ো সার্টিফিকেটের বিষয়টি নিয়ে মামলা দায়েরের পথে হাঁটছেন আইনজীবী গৌতম সর্দার। এদিন তাঁরও দাবি, পরিচালন সমিতিতে মন্টু দাসের অন্তর্ভূক্তিতে আপত্তি জানানোর জন্যই মানস কবি-র হাতে অধ্যক্ষ শ্রাবন্তী ভট্টাচার্যকে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। তার জেরে তিনি এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে।