
কলকাতা: শিক্ষকতার চাকরি করবেন বলে অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, ২০১৬ সালের এসএসসি-র পুরো প্যানেল বাতিল হওয়ায় সবার চাকরি চলে গিয়েছে। তাহলে কি পুরনো চাকরি ছেড়ে ভুল করেছিলেন তাঁরা? অনেক চাকরিহারার মাথায় এই ভাবনা ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের রায় বলছে, তাঁরা পুরনো কর্মক্ষেত্রে ফিরে যেতে পারবেন। পুরনো কর্মক্ষেত্রে ওইসব যোগ্য চাকরিহারাদের তিনমাসের মধ্যে ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর জন্য প্রয়োজনে সুপারনিউমেমারি পোস্ট তৈরির কথাও বলেছে।
২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। চাকরি গিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর। এই চাকরিহারাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা শিক্ষকতার চাকরির আগে অন্য কোনও সরকারি দফতরে চাকরি করতেন। এবার তাঁদের কী হবে?
রায় দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকায় পড়েন না, চাকরিহারাদের মধ্যে এমন অনেকেই হয়তো আগে রাজ্য সরকারের অন্য দফতরে কাজ করতেন। এখন তাঁরা আগের কর্মক্ষেত্রে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন। ওই আবেদনের ভিত্তিতে তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট দফতরকে তাঁদের পদ ফিরিয়ে দিতে হবে। যে পদে কাজ করতেন, সেই পদই দিতে হবে। তাঁদের এই পুনরায় কাজে যোগকে কোনওভাবেই ব্রেক অব সার্ভিস হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।
তবে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যতদিন তাঁরা ওই চাকরি করেননি, তার জন্য বেতন দিতে হবে না রাজ্য সরকারকে। প্রশ্ন উঠতে পারে, একজন ব্যক্তি চাকরি ছাড়ার পর সেই পদে অন্য কাউকে নিয়োগ করা হলে কী হবে? শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, প্রয়োজন হলে মধ্যবর্তী এই সময়ে নতুন যিনি নিয়োগ হয়েছেন, তাঁর জন্য সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করা যেতে পারে।
ফলে চাকরিহারা যেসব শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী আগে অন্য কোনও সরকারি দফতরে চাকরি করতেন, আবেদন করলে তাঁরা তিন মাসের মধ্যে সেখানে ফের চাকরি পাবেন। এই নিয়ে এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “অন্য চাকরি থেকে কেউ এসে থাকলে, সেই তথ্য আমাদের কাছে আছি কি না, দেখতে হবে। যিনি চাকরিরত, এটা তাঁর পক্ষে জানা সম্ভব। তিনিই পুরনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ার আবেদন করবেন।”