
হাওড়া: ঘরে ফিরছে ঘরের ছেলে। সকাল থেকেই খুশির হাওয়া বাড়িতে। আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে গোটা বাড়ি। রান্না হচ্ছে পূর্ণমের প্রিয় লুচি-তরকারি। এসেছে প্রিয় দই-মিষ্টি। বাড়ি ভর্তি আত্মীয়-পরিজনে। ঘর সাজিয়ে স্বামীর প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিলেন স্ত্রী। অবশেষে শুক্রবার বিকালে হাওড়া স্টেশনে নামলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ। তাঁকে নিতে এলেন রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি আবার পূর্ণমের ঘরে ফেরাকে স্মরণ করে রাখতে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেছেন। গোটা এলাকাতেই কার্যত উৎসবের মেজাজ।
শুধু বাড়ির সদস্যরাই নন, তিনিও যে পরিবারের লোকজনের কথা এই সঙ্কটকালে দিবারাত্র ভেবে গিয়েছেন তা বললেন স্টেশনে নেমেই। বললেন, “খুব মনে পড়ছিল বাড়ির কথা, পরিবারের কথা। এখন নিজের দেশে ফিরতে পেরেছি। খুবই ভাল লাগছে।” এদিকে তিনি স্টেশনে পা দিতেই ফুলের মালা নিয়ে এগিয়ে এলেন শুভাকাঙ্খীরা। গাড়িতে বসালেন পুরসভার চেয়ারম্যান। অন্যদিকে বাইরে তখন পুলিশ পুলিশে ছয়লাপ। ছোটাছুটি করছেন অনুরাগীরা। হাওড়া স্টেশনে তখন যেন একবারে উৎসবের মেজাজ।
প্রসঙ্গত, পাক রেঞ্জার্সদের হাতে ২২ দিন আটকে ছিলেন পূর্ণম। ভারতের লাগাতার অনুরোধের পরেও ফেরায়নি পাকিস্তান। অবশেষে দীর্ঘ সঙ্কট কাটিয়ে কয়েকদিন আগেই মুক্ত হন পূর্ণম। ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ফেরেন দেশে। তবে এত বড় বিপদের পরেও নিজের কর্তব্যে অনড় পূর্ণম। তিনি যে অকুতভয় তাও বললেন সোচ্চারে। বীরদর্পে বলে উঠলেন, “ফের কাজে যাব। আগেও কখনও ভয় পাইনি, এখনও পাচ্ছি না, পরেও পাব না।” খুশি রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান বিজয় সাগর মিশ্রও। তিনি বলছেন, “পূর্ণম আমাদের ঘরের ছেলে। রিষড়ার ছেলে। ও আজ নিজের বাড়িতে যেতে পারছে। খুবই ভাল লাগছে।”
বাড়ি ফিরতেই উচ্ছ্বাসের ছবি দেখা যায় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। তার আগে লিলুয়াতে পূর্ণমকে সাউকে এনে মিষ্টিমুখ করান রিষড়ার চেযারম্যান বিজয় সাগর মিশ্র। সেখান দাঁড়িয়েও বীরদর্পে পূর্ণম ফের একবার বললেন, “সেনাদের কখনও ভয় লাগে। সেনারা কখনও কাঁদে না। ফের কাজে ফিরে যাব।”