কলকাতা: দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের চোখে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হচ্ছেন শ্রী রামকৃষ্ণ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিবেকানন্দ। কিন্তু কুণালের সঙ্গে একমত হতে পারলেন না পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি স্পষ্ট বললেন, “আমি রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের থেকেও ওপরে দেখি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।” বর্ষশেষেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘সান্তা ক্লোজ’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, সারাবছর নানা সামাজিক প্রকল্প দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মানুষের পাশে থাকেন। এবার তাঁকে রামকৃষ্ণের ওপরে স্থান দিলেন।
আসলে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন চেতলা দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন ফিরহাদ। তারপর একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে এক সাংবাদিক তাঁকে কুণালের রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানতে চান। বছরের শেষ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে রামকৃষ্ণ ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বামী বিবেকানন্দ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “রামকৃষ্ণের অনেক ভক্ত ছিলেন। মানুষ বিবেকানন্দের মুখ দিয়ে রামকৃষ্ণের কথা শুনতে চেয়েছিলেন। সেই ভাবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা মানুষ অভিষেকের মুখ থেকে শুনতে চায়।” রাজনৈতিক মহলে কুণালের এই বক্তব্যবহু চর্চিতও হয়।
কিন্তু এদিন ফিরহাদ সেই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি স্পষ্ট বললেন, “একেক জন একেক রকমভাবে ব্যাখ্যা করে থাকেন। কার চোখে কী লেগেছে, সেটা আমি বলতে পারব না। তবে এটা নিশ্চিত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সেনাপতি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হচ্ছে আমাদের সর্বেসর্বা। আমরা তাঁর ছায়ার তলায় থাকি। তবে আমার চোখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীরামকৃষ্ণ এবং বিবেকানন্দর থেকেও উপরে।” কুণালের বক্তব্যে কার্যত কর্ণপাত করতে নারাজ ফিরহাদ। আর ঠিক সেই সময় নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব ফের উস্কে দিলেন কুণাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন পুরনোদের উপর ভরসা রাখার কথা বলছেন, তখন কুণাল বললেন, “পুরনো বলতে কেবল ৩-৪ জন, এভাবে হয় নাকি, পুরনোদের মধ্যে যাঁদের আরও সামনে আনা উচিত, তাঁদের আনতে হবে।” যদিও প্রেক্ষাপট আলাদা ছিল, কুণালের আলোচনায় ছিলেন সুব্রত বক্সি, তদুপরি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দুই হেভিওয়েট নেতার ভিন্ন মতাদর্শে আবারও দলের অন্দরেই নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠল।